বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: টাইব্রেকার ভাগ্য মোটেই ভাল না ইস্টবেঙ্গলের। গত IFA শিল্ড ফাইনালে মোহনবাগানের কাছে হারের পর এ কথাটাই বারবার শোনা গিয়েছিল লাল হলুদ সমর্থকদের গলায়। গতকাল সুপার কাপের ফাইনালে (East Bengal Vs Goa Super Cup Final) গোয়ার বিপক্ষে একই চিত্র ধরা পড়ল মশাল ব্রিগেডে। গোটা ম্যাচে এক চুল জমি ছাড়েনি ইস্টবেঙ্গল। এদিকে গোয়াও নিজেদের সর্বশক্তি দিয়ে খেলে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ গোলশূন্য ড্রয়ে নিয়ে গিয়েছিল। তবে গোটা ম্যাচের চুলচেরা বিশ্লেষণ করলে 120 মিনিট দাপট দেখানোর নিরিখে এগিয়েছিল লাল হলুদ। সেই দলটাই পেনাল্টি শুট আউটে হেরে গোয়ার হাতে সুপার কাপ দিয়ে বিদায় নিল। ঠিক কোথায় হারল ইস্টবেঙ্গল? লাল হলুদের পরাজয়ের নেপথ্যে দুজনকেই দায়ী করছেন ভক্ত মহল।
ইস্টবেঙ্গলের হারের পেছনে দায়ী এই দুই প্লেয়ার!
শেষবারের মতো, সুপার কাপের সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ পাঞ্জাব এফসিকে গুঁড়িয়ে ফাইনালের টিকিট পাকা করেছিল ইস্টবেঙ্গল। স্বপ্ন দেখেছিল সুপার কাপ জেতার। সেই মতোই ম্যাচের একেবারে শুরু থেকেই শক্তিশালী গোয়ার বিপক্ষে নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে শুরু করে লাল হলুদের ছেলেরা। গত ম্যাচে লাল কার্ড দেখার কারণে এদিন উপস্থিত থাকতে পারেননি প্রধান কোচ অস্কার ব্রুজো। তাই লাল হলুদের দায়িত্ব ছিল সহকারি কোচ বিনো জর্জের হাতে।
গতকালের ম্যাচ যারা দেখেছেন তারা জানবেন, প্রত্যেকবার আক্রমণ শানিয়ে গোয়াকে একেবারে নাজেহাল করে দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তবে গোয়াও হাল ছাড়ার পাত্র নয়। তারাও লাল হলুদকে গোলের মুখ খুলতে দেয়নি। সেই সূত্র ধরেই নির্ধারিত 120 মিনিটের খেলায় আক্রমণ প্রতি আক্রমণের মধ্যে দিয়ে ম্যাচ গড়ায় গোলশূন্য ড্রয়ে। ফলে টাইব্রেকারে নামে দুই দল। সেখানেই দলের হয়ে প্রথম গোল করে ব্যবধান বাড়ান ইস্টবেঙ্গল তারকা কেবিন সিবিলে।
তবে গোয়ার তরফে প্রথম শট মিস করেন বোরজা হেরেরা। সেখান থেকেই জয়ের আশা তৈরি হয়েছিল লাল হলুদের। এরপর সল ক্রেসপোর গোলে 2-1 ব্যবধানে এগিয়ে যায় মশাল ব্রিগেড। এদিকে গোয়ার হয়ে গোল করে দেন জেভিয়ার সিভেরিয়ো। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গোল করেন মিগুয়েল। তবে লাল হলুদের ব্রাজিলিয়ান গোল করলেও গোল পাননি মহম্মদ রশিদ। এদিন বল বারের উপর থেকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। আর সেখানেই প্রথম বড় ধাক্কা খায় ইস্টবেঙ্গল। গোয়ার ছেলেরা প্রতিটি শটে গোলের মুখ খুলে ফেলছিলেন। পরপর গোয়ার হয়ে গোল করেন ডেজান ড্রাজিচ, মহম্মদ নেমিল এবং ডেভিড টিমর।
অবশ্যই পড়ুন: হাওড়া থেকে বিনা টিকিটে ৩০০ যাত্রীকে বন্দে ভারতে যাত্রার অনুমতি দিল রেল
শেষমেষ খেলা গড়ায় সাডেন ডেথে। সেখানেই অগ্নিপরীক্ষা ছিল দুই দলের। সেই মতোই প্রথম গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন হামিদ আহদাদ। অন্যদিকে প্রতিপক্ষের উদন্ত সিংও গোল করতে ভুল করেননি। তবে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় সপ্তম শট। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে 7 নম্বর শট করলেও সেটিকে গলে রূপান্তরিত করতে পারলেন না পিভি বিষ্ণু। তিনিও রশিদের মতো বল উড়িয়ে দিলেন বারের উপর থেকে। আর সেখানেই হেরে যায় ইস্টবেঙ্গল। লাল হলুদের কফিনে শেষ পেরেক পুতে দেন গোয়ার সাহিল তাভোরা। স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায় মশাল ব্রিগেডের। লাল হলুদ সমর্থকদের একাংশের দাবি, রশিদ এবং পিভি বিষ্ণুর ভুলের কারণেই হারতে হলো ইস্টবেঙ্গলকে।