সহেলি মিত্র, কলকাতা: চলতি বছর প্রতিটি পুজো কমিটি ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান পাবে। বৃহস্পতিবার এমনই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তবে এই ঘটনা নিয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে মামলা করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হল সিপিএম ও বিজেপির তরফে। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন।
দুর্গাপুজোর অনুদান নিয়ে হাইকোর্টে মামলা!
সিপিএম সাংসদ ও আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এবারও তিনি হাইকোর্টে যাবেন এই অনুদানের বিরোধিতায়। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও এই নিয়ে মামলা হয়েছে। যাইহোক, এই ঘটনার সঙ্গে এবার উঠে এল ডিএ প্রসঙ্গও। ডিএ না দিয়ে অনুদান দেওয়ার প্রসঙ্গে সোচ্চার হলেন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়।
মলয় মুখোপাধ্যায় এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আপনার আমাদের, টাকা পুরো নয়ছয় করছে এই সরকার। সরকারকে প্রথমে সুপ্রিম কোর্ট বকেয়া ডিএ-র ৫০ শতাংশ মেটাতে বলেছিল। সরকার পক্ষের উকিল জানিয়েছিলেন যে এই টাকা মেটাতে গিয়ে নাকি সরকারের মাজা ভেঙে যাবে। পরে ২৫% মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখানে সরকারের খরচ হত ১০০০০ কোটি টাকা। সেই টাকা এখনো মেটায়নি। অন্যদিকে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ স্কিমে সরকার ৮০০০ কোটি খরচ করবে। ২০১৬ থেকে আমরা মামলা করেছি, বকেয়া DA নিয়ে লড়াই করছি। সেক্ষেত্রে সরকার বারবার বলেছে টাকা নেই। কিন্তু এই কথাটির ওপর ট্রাইব্যুনাল কোনো মান্যতা দেয়নি। বিচারকরা তো দেখছেন, টাকা নেই বলেও সরকার কীভাবে টাকা নয়ছয় করছে। ফলে এই ৮০০০ কোটি আর ২০১৮ সাল থেকে ক্লাবগুলিকে দুর্গাপুজোর যে অনুদান দেওয়া হয়েছে সেখানে ২০০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সরকার আমাদের টাকা না দিয়ে অন্যদের টাকা বিলোচ্ছে একপ্রকার। সরকার বকেয়া ডিএ-র টাকা না দিয়ে দানধ্যান করছেন। টাকা দিয়ে খেলা, মেলা সব চলছে। সেখানে পেনশন প্রাপকরা বকেয়া টাকা পাচ্ছেন না।’
আরও পড়ুনঃ দুবাইয়ে বসে কলকাতায় প্রতারণা! ক্রিপ্টোয় বিনিয়োগের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ
মলয় মুখোপাধ্যায়ের পাশে ছিলেন বামপন্থী আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, ‘উনি যখন ক্ষমতা দেখে চলে যাবেন না, তখন কী যে অবস্থা হবে ভাবতেও পারবেন না। প্রতিটি সরকারি কর্মী, পেনশন প্রাপকদের অভিশাপ প্রতি পদে পদে অনুভব করবেন। সকলের মুখের গ্রাস কেড়ে নিচ্ছে। আগামী ৪ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি আছে। মাননীয় বিচারপতি সঞ্জয় করোল, প্রশান্ত মিশ্রর বেঞ্চে মামলা উঠবে। আমাদের বিশ্বাস, আগামী মামলায় এবং রুল জারি করে নির্দেশ দেবে আদালত।
কী বলছেন ফিরদৌস শামিম?
সরকারের বিচারবুদ্ধি লোপ পেয়েছে। এটা কোনো সময়ে হয় না। ২৫% মহার্ঘ্য ভাতা দিতে বলেছে আদালত। বিশিষ্ট আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘এই মামলায় সরকারি কর্মচারীরা ইতিমধ্যেই ছয়বার জিতে গেছেন। সরকার বলছে মোডিফাই করতে। আসলে সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে বুঝতে চাইছে না। এই যে বলছে ফান্ড নেই, সেটা যুক্তি হতে পারে না।’