সুরক্ষিত থাকবে ভারতের ফুসফুস, আরাবল্লীর মাত্র ০.১৯%-র খননযোগ্য, জানাল কেন্দ্র

Aravalli Hills Controversy,

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: আরাবল্লী পর্বতের (Aravalli Hills Controversy) অস্তিত্ব নিয়ে এইমুহুর্তে ভয়ংকর প্রশ্নের মুখে পড়েছে ভারতবাসী। পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে সংরক্ষণকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ যেন বেড়েই চলেছে৷ তৈরি হয়েছে ভয়ঙ্কর আশঙ্কা৷ আসলে প্রায় ২.৫ বিলিয়ন বছর ধরে রাজস্থান, হরিয়ানা, গুজরাত ও দিল্লির মতো এলাকাকে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে রক্ষা করছে আরাবল্লি পাহাড়। কিন্তু বিগত কয়েকদিন ধরে সুপ্রিম রায়ের পর সেখানে খননকার্য নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এমতাবস্থায় সোমবার কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট জানানো হয় যে আরাবল্লী পর্বতে খননকার্য নিয়ে উদ্বেগের কিছুই নেই৷

আরাবল্লী নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রকের একটি কমিটির সুপারিশ গ্রহণের পর সুপ্রিম কোর্ট আরাবল্লী পাহাড় এবং আরাবল্লী পর্বতমালার একটি নতুন সংজ্ঞা জারি দিয়েছে। বলা হয়েছে, পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ১০০ মিটার বা তার বেশি উঁচু জমিই আরাবল্লী পাহাড়ের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। সেক্ষেত্রে আরাবল্লী অঞ্চলের প্রায় ৯০ শতাংশ আরাবল্লী এলাকা থেকে বাদ পড়বে এবং সেগুলি পর্বত হিসেবে বিবেচিত হবে না। ফলে ভবিষ্যতে যদি এখানে খনন বা অন্যান্য নির্মাণ কাজ শুরু হয়, তাহলে এই পাহাড়গুলি অদৃশ্য হয়ে যাবে। ফলে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ শুরু করে বিভিন্ন NGO থেকে শুরু করে স্থানীয় গ্রামের মানুষদের মধ্যে। পাশাপাশি রাজনৈতিক ময়দানেও বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে কেন্দ্রকে। তাই সেই উদ্বেগে খানিক স্বস্তি দিতে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব।

কী বলছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী?

রিপোর্ট মোতাবেক গতকাল অর্থাৎ সোমবার কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব আরাবল্লীর খননকার্য সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র অবস্থান স্পষ্ট করলেন তিনি। ভূপেন্দ্র যাদব আরাবল্লী পর্বতমালা সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়কে ঘিরে তৈরি গুজব এবং ভুল তথ্য মানতে নারাজ। তিনি দাবি করেছেন, “আরাবল্লী পর্বতমালা আমাদের দেশের প্রাচীনতম পর্বতমালা। মোদী সরকার সবসময়ই আরাবল্লী অঞ্চলে সবুজায়নকে উৎসাহিত করেছে। কিন্তু কিছু লোক ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে, কিন্তু আমি রায়টি মনোযোগ সহকারে পড়েছি। আমি স্পষ্ট করে বলছি, কোনও ছাড় দেওয়া হয়নি।” তিনি আরও জানান, মোট আরাবল্লি এলাকা প্রায় ১.৪৪ লক্ষ বর্গকিলোমিটার, যার মধ্যে মাত্র ০.১৯ শতাংশ খনির জন্য উপযুক্ত। ৯০ শতাংশেরও বেশি এলাকা সংরক্ষিত অঞ্চলের মধ্যে পড়বে। আরাবল্লী নিরাপদে আছে, সংরক্ষিত আছে৷’’

আরও পড়ুন: লেকটাউনে মেসি মূর্তি নিয়ে বিতর্ক! “কার জমিতে মূর্তি?” প্রশ্ন তুলল হাইকোর্ট

বিতর্ক যেন পিছু হটছে না

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবের আরাবল্লী ব্যাখ্যার পরেও জল্পনা যেন কমছে না। কড়া বিরোধিতা করেছেন কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলটকে৷ তাঁর দাবি, পুরনো তথ্য-পরিসংখ্যানের উপরে ভিত্তি করে এই খননকার্যের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে৷ এর জেরে বিরাট ক্ষতি হয়ে যেতে পারে দেশের রাজধানী সহ গোটা এনসিআর এলাকার পরিবেশের৷ অন্যদিকে নীলম আহলুওয়ালিয়া জানাচ্ছেন, রাজস্থানের বেশিরভাগ অংশে আরাবল্লি পর্বতমালার বেশিরভাগ অংশ ১০০ মিটারেরও কম উঁচু। সেখানে গড় উচ্চতা ৫০-৮০ মিটার। ফলে এই সিদ্ধান্তের ফলে এখানে পাহাড়ের সুরক্ষা থাকছে না। আর এই আরাবল্লী সংক্রান্ত তর্ক বিতর্কের মাঝেই উত্তেজনার পারদ যেন আরও চড়ছে।

Leave a Comment