সূচিতে হালকা বদল, দুর্গাপুরে ৩ কিমি রোড শো করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, শুরু প্রস্তুতি

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই জমি শক্ত করতে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলি একাধিক কর্মসূচি পালন করে চলেছে। আর এই আবহে এবার আগামী ১৮ জুলাই, শুক্রবার দুর্গাপুরে নেহরু স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। তবে ওইদিন শুধু জনসভা থেকে জনসংযোগ নয়, রোড শো এর মত এক ব্যবস্থাপনাও করা হতে চলেছে।

বঙ্গ সফরে নরেন্দ্র মোদী

আগামী শুক্রবার দুর্গাপুরের নেহরু স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রীর সভার আয়োজন হতে চলেছে। এদিকে একই দিনে বিহারেও প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি রয়েছে। তাই তিনি বাংলা হয়ে বিহার যাবেন, না কি বিহারের কর্মসূচি সেরে বাংলায় ঢুকবেন, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছিল। শেষে ‘আনন্দবাজার’ এর রিপোর্ট অনুযায়ী গতকাল, ১৪ জুলাই অর্থাৎ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে ১৮ জুলাইয়ের চূড়ান্ত সফরসূচি নিয়ে এক নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মাঠে পৌঁছোনোর ব‍্যবস্থা এমন ভাবে সাজাতে হবে যাতে, সভাস্থলে পৌঁছোনোর আগে থেকেই জনসংযোগ করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

শেষ মুহূর্তে সফরসূচি পরিবর্তন

সম্প্রতি বিজেপির তরফেও এক পোস্টের মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, আগামী ১৮ জুলাই, শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিহারে একটি কর্মসূচি রয়েছে। সেখান থেকে প্রথমে ঠিক হয়েছিল যে তিনি আকাশপথে দুর্গাপুরের অণ্ডাল বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। এবং হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সভাস্থলে যাবেন। তবে সেই পরিকল্পনায় খানিক পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নরেন্দ্র মোদী অন্ডাল বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে না গিয়ে সড়কপথে দুপুর ২ টোয় নেহরু স্টেডিয়ামে পৌঁছবেন। তাই তড়িঘড়ি নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে শেষমুহূর্তে সভাস্থলের শেষ ৩ কিমি রাস্তাজুড়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের জমায়েত ও সজ্জার আয়োজন করা হচ্ছে।

আপাতত শেষ আপডেট অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর রোড শো-এর জন্য রাস্তার দুধারে দলীয় পতাকা, ফ্লেক্স, ফেস্টুন, ব‍্যানারে শেষ ৩ কিলোমিটার সাজানো হবে। এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কনভয় যখন ঢুকবে, তখন দু’পাশের জমায়েত পুষ্পবৃষ্টি করবে। তবে এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি যে তিনি কনভয় থেকে নামবেন কিনা। কারণ সেই নিয়ে উপরমহল থেকে কোনো স্পষ্ট নির্দেশ আসেনি। তবে তাঁর সড়ক-সফরে আগেও রাস্তার দু’ধারে এমন জমায়েত দেখা গিয়েছিল।

কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন

সেক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী জমায়েতের মাঝখান দিয়ে যাওয়ার সময় কনভয়ের দরজা খুলে পাদানিতে দাঁড়িয়ে জনতার উদ্দেশে হাত নাড়াতে এবার অনেক সময় গাড়িতে বসেই নমস্কার জানিয়েছিলেন তিনি। তবে এবারের এই জমায়েতের মূল উদ্দেশ্য হল জনতার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ না করেও দৃশ্যমান জনসংযোগে অংশ নেওয়া।

এছাড়াও বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে একাধিক কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন হতে পারে। যার মধ্যে পরিবহন মাধ্যম যেমন আছে ঠিক তেমনই রয়েছে শিল্পের নানা প্রকল্প।

বিজেপি সদস্যদের কর্মসূচি

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গ সফরকে ঘিরে ইতিমধ্যেই দুর্গাপুরে পৌঁছে গিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল। তবে নয়া রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য দলীয় কাজ পরে যাওয়ায় সভার আগের দিন অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়াও দলের তরফে গোটা প্রস্তুতির দায়িত্বে রয়েছেন রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও সৌমেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পাল এবং জ্যোতির্ময় মাহাতো।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আটক কাকদ্বীপের ৩৪ মৎস্যজীবী! উঠেছে আন্তর্জাতিক জলসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ

প্রসঙ্গত, গত ২৯ মে আলিপুরদুয়ারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জনসভা করেছিলেন। বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে তিনি হেলিকপ্টারে সরাসরি আলিপুরদুয়ারের সভাস্থলে নেমেছিলেন। সেবার সড়কপথে যাননি। তবে এবার বঙ্গে যেহেতু নির্বাচনের এর বেশি দেরি নেই তাই এখন থেকেই জনসংযোগ কর্মসূচির নকশা বদলানোর কর্মসূচি গ্রহণ করতে চাইছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Leave a Comment