প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: একের পর এক বাঁধা এসেই চলেছে রোজভ্যালি কাণ্ডে! টাকা ফেরানোর তদন্তকে ঘিরে অডিটের দায়িত্ব নিয়ে বিগত কয়েকমাস ধরে নানা বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। সেবির ওপর দায়িত্ব দেওয়া হলেও পরে সেই দায়িত্ব ফেরৎ দেওয়া হয়, তবে এবার এই বিষয় নিয়ে বড় পদক্ষেপ নিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। জানা গিয়েছে এবার কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ফরেন্সিক অডিট করানোর দায়িত্ব দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
দায়িত্ব থেকে হাত সরায় সেবি
উল্লেখ্য, রোজভ্যালি চিট ফান্ড-কাণ্ডে প্রতারিত আমানতকারীদের আমানত ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্ট বিচারপতি দিলীপ শেঠ কমিটি গঠন করে দিয়েছিল। কিন্তু সেই কমিটির বিরুদ্ধেই পরবর্তীকালে ওঠে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ। এরপর আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ফরেনসিক অডিট করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সেবিকে। রোজভ্যালির ১০টি সম্পত্তি বিক্রি সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট দিতে সেবি-কে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। তাতে বলা হয়েছে, বাজার দরের তুলনায় কত বেশি বা কম দামে সম্পত্তি বিক্রি হয়েছে, সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তুলে পেশ করতে হবে। কিন্তু সেবি পরবর্তী হাত গুটিয়ে নেয়। এবার সেই কাজের দায়িত্ব গেল কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের অধীনস্থ সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস বা SFI-এর কাছে।
দায়িত্ব দেওয়া হল SFI-কে
রিপোর্ট মোতাবেক গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে রোজভ্যালির টাকা ফেরত মামলার শুনানি উঠেছিল। সেই মামলায় অবশেষে ফরেন্সিক অডিট করানোর দায়িত্ব দেওয়া হল কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের অধীনস্থ সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিসের বা এসএফআই-এর কাছে। আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে ওই সম্পত্তি এবং এডিসি কমিটি সংক্রান্ত ফরেন্সিক রিপোর্ট জমা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট দফতরকে। এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ১১ ডিসেম্বর। ওইদিনই এই মামলায় কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেলকে প্রদত্ত দায়িত্ব সংক্রান্ত ‘ফিডব্যাক’ প্রদান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাতসকালে ভয়ংকর কাণ্ড আলিপুরদুয়ারে! দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল স্কুল ভ্যান
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবার মাসের শুনানিতেই রোজভ্যালির টাকা ফেরত দেওয়ার মামলায় ফরেন্সিক অডিটের দায়িত্ব থেকে ‘সরে যাওয়ার’ কথা স্পষ্ট জানিয়েছিল সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া বা সেবি। তাঁরা আদালতকে জানিয়েছিল, সংস্থায় ‘দক্ষ লোকের অভাব থাকায়’ এই কাজ করতে তাঁরা ‘অপারগ’। সেই সময় বিচারপতি ভরদ্বাজ বলেছিলেন, ‘সেবি অনিচ্ছুক বলে তো আদালত চুপ করে বসে থাকতে পারবে না। তাই এ ব্যাপারে তদন্ত করাতেই হবে।’ এরপর দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পর এক মাসের ব্যবধানে নতুন দায়িত্বের হস্তান্তর করা হল আদালত। এখন দেখার পালা SFI কতটা দায়িত্ব পালনে সফল হয়।