একটা ভুল মন্তব্য, ভুল আচরণ সে সাধারণ মানুষ হোক কিংবা কোনও সেলেব্রিটি, তাঁর সুনাম ধুলোয় মিশে যেতে সময় লাগে না। ঠিক যেমনটা হচ্ছে জনপ্রিয় বাঙালি অভিনেতা ঋজু বিশ্বাসের (Riju Biswas) সঙ্গে। সবাই তাঁকে বিশেষভাবে চেনেন ‘বউ কথা কও’-এর নিখিল হিসেবে। মিষ্টিভাসী, নম্র ব্যবহার সম্পন্ন এই অভিনেতাকে বহু মানুষ পছন্দ করেন। এছাড়াও তাঁকে ‘তোমায় আমায় মিলে সিরিয়ালে দেখা গিয়েছিল। তবে সম্প্রতি এক উঠতি মডেল অভিনেতার বিরুদ্ধে এমন কিছু অভিযোগ এনেছে যা সকলকে অবাক করে রেখে দিয়েছে। অভিনেতার বিরুদ্ধে উঠেছে অশালীনতার অভিযোগ।
অভিনেতার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ জনপ্রিয় মডেলের
বৃষ্টি মণ্ডল নামের এক উঠতি মডেল সামাজিক মাধ্যমে তাঁর আর অভিনেতার বেশ কিছু চ্যাটের স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন এবং ওই মডেল জানিয়েছেন কীভাবে অভিনেতা তাঁকে মেসেজ করে উত্যক্ত করেছেন। এখানেই শেষ নয়, তার পর একে একে অনেক মহিলাই ঋজুর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তোলেন। সত্যিই কি তাই? ইতিমধ্যে এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কমেন্ট করা মানুষ দুভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছেন।
বৃষ্টির দাবি, প্রথমে ইনস্টাগ্রামে তাঁর পোস্টে প্রশংসা—ধীরে ধীরে ডিএম, তারপর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চাওয়া। আর সেখান থেকেই নাকি শুরু অশা’লীন কথাবার্তা। বৃষ্টির কথায়, “আমি কোনওদিন এমন পোস্ট করি না, কিন্তু এবার বাধ্য হলাম। প্রথমে প্রশংসা, পরে বারবার কল—আমি না বলতেই আচরণ বদলে গেল। নিজের নিরাপত্তার জন্য বাধ্য হয়ে কথা কড়া করেছি, কিন্তু দোষী মনে করছি না।”
কী বলছেন নেটিজেনরা?
এদিকে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী লিখেছেন, আমি শুধু একটা নিরপেক্ষ কথা বলতে চাই, যতগুলো স্ক্রিনশট দেখেছি, তার বেশিরভাগেই দেখা যাচ্ছে তিনি শুধু মেয়েদের প্রশংসা করেছেন, যেমন বলেছেন “তুমি শাড়িতে ভালো লাগছো” ইত্যাদি। এতে ভুলটা কোথায়? এমন সাধারণ প্রশংসা তো অশালীন নয়। যদি কারও মেসেজে অস্বস্তি হয়, তাহলে ব্লক করার সুযোগ তো সবসময়ই থাকে। কিন্তু শুধুমাত্র এ রকম ভদ্র প্রশংসার জন্য কাউকে প্রকাশ্যে হেয় করা বা ভাইরাল করা সত্যিই অন্যায়। এতে একজন মানুষের সম্মান ও পেশা দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই এসব ব্যাপারে একটু দায়িত্ব নিয়ে আচরণ করা উচিত, কারণ প্রশংসা কোনো অপরাধ নয়।’
অপর একজন লিখেছেন, “তোমাকে তো বলেছিল… আমাকে তো সরাসরি সেক্স অফার দিয়েছিল! কে কি ভাবে, তার পরোয়া নেই এটা সত্যি।” আরও এক নেটিজেনের ক্ষোভ, “অ্যাটিটিউড দেখায়! আর না বললেই উলটে বলে আমি ইগো দেখাচ্ছি! এমন মানুষ শিল্পী হতে পারে?” কেউ কেউ আবার বলছেন, “তদন্ত হোক। সোশ্যাল মিডিয়ায় নাম খারাপ করা সহজ, সত্য খুঁজে বের করা কঠিন।”
সাফাই দিলেন অভিনেতা
সাত মাস হয়ে গেল কোনও ধারাবাহিকে দেখা যায়নি তাঁকে। মায়ের অসুস্থতার জন্য অনেক দিন স্টুডিয়োপাড়া থেকে দূরে তিনি। তার মধ্যেই যে এই কাণ্ড হয়ে যাবে ভাবেননি। এদিকে এই ঘটনা সামনে আসতেই বড় সাফাই দিলেন অভিনেতা ঋজু বিশ্বাস। তিনি জানান, ‘মেসেজ করে কোনও ভুল করিনি। কেউ কি দেখাতে পারবেন আমি অশালীন কোনও প্রস্তাব দিয়েছি। ফেসবুকে এক জন অন্য জনকে মেসেজ করতে পারে না?’
ঋজু আরও যোগ করেন, ‘মিথ্যা কথা বলতে একেবারেই পছন্দ করি না। বলিও না। এ ক্ষেত্রেও করতে চাইনি। আমি মেসেজ করেছি অনেককেই। কিন্তু, শাড়িতে ভাল লাগছে বলা কি অন্যায়? আমার মাকেও দু’দিন আগে প্রশংসা করেছি একই ভাবে।’ এই ঘটনার পরে আইনি পদক্ষেপ করেছেন ঋজু। জানিয়েছেন, মানহানির মামলা করেছেন সেই উঠতি মডেলের বিরুদ্ধে।