সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে স্কুল সার্ভিস কমিশন শনিবার রাতে অযোগ্যদের তালিকা (SSC Tainted List) প্রকাশ করল। সেই তালিকায় মোট 1804 জনের নাম উঠে এসেছে। আর সেখানে দেখা যাচ্ছে হুগলির খানাকুলের তৃণমূল নেত্রী সাহিনা সুলতানার নাম। ফলত এ নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শোরগোল।
আদালতের নির্দেশে প্রকাশিত হল তালিকা
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং সতীশচন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চ কমিশনকে 7 দিন সময় দিয়েছিল অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করার জন্য। এমনকি আদালত বলে দিয়েছিল, অযোগ্যরা কোনোভাবেই আসন্ন 7 ও 14 তারিখের নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে পারবে না। আর সেই নিয়ম মেনে মাত্র দু’দিনের মাথায় শনিবার রাত 8:00 টা নাগাদ কমিশনের ওয়েবসাইটে দাগিদের নাম, রোল নম্বর ও সিরিয়াল নম্বর প্রকাশ করা হয়।
তালিকায় রয়েছে তৃণমূল নেত্রী সাহিনা সুলতানা
তবে এই তালিকা দেখে চক্ষু চড়কগাছে উঠেছে অনেকের। কারণ সাহিনা সুলতানা তৃণমূলের স্থানীয় নেত্রী তো বটেই, পাশাপাশি তিনি হুগলির জেলা পরিষদের টানা তিনবারের সদস্য। জানা গিয়েছে, 2013 থেকে 2018 সাল পর্যন্ত তিনি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। অভিযোগ উঠছে, ওই সময় তিনি এসএসসি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষিকা পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রথমবার বাঁকুড়ার এক স্কুলে এবং পরে খানাকুলের রাজহাটি বন্দর হাইস্কুলে তিনি শিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত হন। তবে স্থানীয়রা দাবি করছে, জেলা পরিষদের কাজে এতটাই তিনি ব্যস্ত ছিলেন যে স্কুলে পা রাখার সময় পেতেন না। উল্লেখ্য, তৃণমূল নেত্রী সাহিনা সুলতানা আবার চাকরি চুরির দায়ে জেল থাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য, শুধুমাত্র সাহিনা সুলতানা নন, বরং তালিকায় নাম এসেছে তাঁর ভাই খানাকুলের প্রভাবশালী নেতা মাইনুল হকের স্ত্রী নমিতা আদকেরও। বিরোধীরা দাবি, একই পরিবারের একাধিক নাম উঠে আসাতেই প্রমাণ মিলছে যে নিয়োগ দুর্নীতির শিকড় কতটা গভীর পর্যন্ত ছড়িয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ ধরা ছোঁয়ার বাইরে সোনা, ২৮৫০ টাকা ঊর্ধ্বগতি রুপো! আজকের রেট
প্রসঙ্গত, তালিকা প্রকাশের পর তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদার। তাঁরা দাবি করছেন যে, নিয়োগ দুর্নীতির জলে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরাই একমাত্র বিস্তার লাভ করেছে। আজ কমিশনের তালিকা সেই সত্যিই একেবারে সামনে আনল।