প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত ৪-৫ বছর ধরে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে স্কুলের ফান্ড! এবার প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠল বারুইপুরের (Baruipur) মল্লিকপুর আব্দাস সকুর হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এদিকে অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই উঠে আসে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য, যার দরুন স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশে সাসপেন্ড করা হল প্রধান শিক্ষক অঞ্জন দাসকে। গোটা ঘটনায় আলোড়ন পরে গিয়েছে এলাকা জুড়ে।
যথেচ্ছভাবে ব্যবহার হত স্কুল তহবিলের অর্থ
পর্ষদের তরফে জানা গিয়েছে, বারুইপুরের মল্লিকপুর আব্দাস সকুর হাইস্কুলে নাকি গত চার-পাঁচ বছর ধরে ঠিকমত অডিট হয় না বললেই চলে। এমনকি বিগত কয়েক বছর ধরেই ম্যানেজিং কমিটির রেজোলিউশন ছাড়াই বিদেশ ভ্রমণে গিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক। শুধু তাই নয় পরিচালন কমিটির অনুমোদন ছাড়াই যথেচ্ছভাবে স্কুল তহবিলের অর্থ ব্যবহার করার অভিযোগ উঠে আসছিল অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক অঞ্জন দাসের বিরুদ্ধে। আর এবার সেই সকল অভিযোগের ভিত্তিতে কড়া পদক্ষেপ নিল স্কুল শিক্ষা দফতরের দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডিসিপ্লিনারি কমিটি। সাসপেন্ড করা হল মল্লিকপুর আব্দাস সকুর হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অঞ্জন দাসকে।
৩৫ লক্ষ টাকা কারচুপির অভিযোগ!
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে মল্লিকপুর আব্দাস সকুর হাইস্কুলের, স্কুলবাড়ি রং করানো থেকে শুরু করে নতুন টেবিল, বেঞ্চ তৈরি করাতে যে টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, সেগুলি দিনের পর দিন নয়ছয় করা হচ্ছিল। মেরামতির জন্য কোনো টাকা খরচ করা হচ্ছিল না। একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন অঞ্জন দাসের বিরুদ্ধে। প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা কারচুপির অভিযোগউঠে এসেছিল। যা দেখে হতবাক স্কুল শিক্ষা দফতর। এমনকি গোটা ঘটনার কথা জানতে পেরে স্তম্ভিত অভিভাবকরাও। তাঁদের সকলের প্রশ্ন, প্রধান শিক্ষক যদি এইভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কোন পথে যাবে?
আরও পড়ুন: ‘এতদিন কোথায় ছিলেন!’ ‘দাগি অযোগ্য’দের কড়া ভর্ৎসনা হাইকোর্টের, খারিজ মামলা
উল্লেখ্য, স্কুলের তহবিলের টাকা নয়ছয় প্রসঙ্গে, মল্লিকপুর আব্দাস সকুর হাইস্কুলের পরিচালন কমিটির তরফে সভাপতি শুভাশীষ সাহু জানিয়েছেন যে, ‘ ইতিমধ্যেই আর্থিক তছরূপের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র ছাপানোর বিলের থেকেও টাকা লোপাট করেছেন। ২০২০ সাল থেকে ধাপে ধাপে এই কাজ করেছেন। আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা তছরুপ করেছেন।’ এই খবরের ভিত্তিতে বারবার সাসপেন্ডেড শিক্ষককে ফোন করা হলে তিনি কোনো সাড়া দেননি। আর এই ঘটনার মাধ্যমে ফের প্রশ্ন উঠছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার হাল নিয়ে।