স্টেশনে প্রসব যন্ত্রণা! ছুরি, চুলের ক্লিপ দিয়েই যা করলেন চিকিৎসক, ধন্য ধন্য করছে সবাই

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: মাঝ স্টেশনেই প্রসব যন্ত্রণায় চিৎকার এক মহিলার! তড়িঘড়ি দেবদূত হয়ে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন মিলিটারি হাসপাতালের চিকিৎসক! অবশেষে কোনো রকমে জোগাড় করা পর্দা, কাঁচি এবং ক্লিপ দিয়ে চিকিৎসকের উপস্থিত বুদ্ধি ও সাহসিকতায় ঝাঁসি স্টেশনে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দিলেন ওই মহিলা। গোটা ঘটনায় তাজ্জব সকলে।

ঘটনাটি কী?

ঘটনসূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার, দুপুর নাগাদ বীরঙ্গনা লক্ষ্মীবাই ঝাঁসি স্টেশনে এক গর্ভবতী মহিলা পানভেল থেকে বারাবানকি যাচ্ছিলেন। সেই সময় যাওয়ার পথে ট্রেনের মধ্যেই প্রসবযন্ত্রণা শুরু হয়ে যায় ওই মহিলার। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী ও সন্তান। সেই সময় ওই পরিস্থিতিতে কী করবেন বুঝতে না পেরে দ্রুত রেল মদদ অ্যাপের মাধ্যমে সাহায্যের আবেদন জানানো হয়। তারপরই ঝাঁসি স্টেশনে ট্রেন থামলে ওই মহিলাকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়।

প্ল্যাটফর্মেই প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত

কিন্তু সেইসময় ওই গর্ভবতী মহিলার অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল কোনোভাবেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মত পরিস্থিতি ছিল না। ওই সময়ই স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন ঝাঁসি মিলিটারি হাসপাতালের চিকিৎসক, মেজর রোহিত বাচওয়ালা। তিনি ওইদিন ছুটি নিয়ে এক মাসের জন্য নিজের বাড়ি ফিরছিলেন। মহিলার চিৎকার শুনে ছুটে চলে আসেন। শেষে উনি সিদ্ধান্ত নেন যে প্ল্যাটফর্মেই প্রসব করানো হবে ওই মহিলার। যেমন সিদ্ধান্ত তেমন কাজ। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা করা হয় সবকিছুর।

ছুরি ও হেয়ার ক্লিপ দিয়ে অপারেশন!

জানা গিয়েছে, সেই সময় ওই চিকিৎসক দ্রুত মহিলা রেলকর্মীদের চারিদিকে পর্দা দিতে বলেন। প্রসবের জন্য জোগাড় করে এনে দেওয়া হয় গ্লাভসও। সঙ্গে সঙ্গে তিনি পকেট ছুরি ও হেয়ার ক্লিপ ব্যবহার করে ওই মহিলার প্রসব করান। এইরকম চাঞ্চল্যকর মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে ভিড় জমেছিল স্টেশন চত্বরে।

ফুটফুটে সুস্থ এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। এই মুহুর্তে মা ও কন্যা সন্তান দুজনেই স্থিতিশীল রয়েছেন। শেষে রেল কর্তৃপক্ষের তরফে ওই মহিলা ও নবজাতককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

আরও পড়ুন: ‘পে কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে কর্মীদের নো চিন্তা! ঠিক সময়ে মিলবে DA’, তথ্য ফাঁস মলয়ের

ঘটনার পর সকলে সাধুবাদ জানিয়েছেন ওই চিকিৎসককে।এমনকি নবজাতকের বাবা মহম্মদ জুবেইর কুরেশি বলেন, “আমি ওই সেনা চিকিৎসক ও রেলওয়ে স্টাফদের কাছে সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকব। যে মহিলা টিটিই সাহায্য করেছিলেন, তিনিও বিকেলে ফল আর খাবার নিয়ে এসে দেখা করেন।” মেয়েকে এইভাবে জন্ম দেবেন ভাবতে পারেননি মা, ফুটফুটে মেয়েকে কোলে নিয়ে খুব খুশি তিনি।

Leave a Comment