সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ব্যস্ত রাস্তায় বাবা-মায়ের স্কুটার বা বাইকের পেছনে শিশুরা বসে রয়েছে, এই দৃশ্য রোজই নজরে পড়ে। কখনো বাবার কাঁধে হাত, কখনো মায়ের আঁচল ধরেই বসে থাকে শিশুরা। তবে হঠাৎ ব্রেক বা সামান্য ধাক্কা পুরো গল্প বদলে দিতে পারে। সেই চিন্তাভাবনা থেকেই শিশুদের সুরক্ষার জন্য বিরাট নির্দেশ দিলে কর্ণাটক হাইকোর্ট (Karnataka High Court)। শিশুদের নিয়ে এবার দুই চাকার গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট গতিসীমা, হেলমেট ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে যে নিয়ম 2022 সালে দেশে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, তা এবার অবিলম্বে চালু করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কী বলল হাইকোর্ট?
এদিন প্রধান বিচারপতি বিভু বাখরু এবং বিচারপতি সি.এম. পুনাচারের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, নিয়ম থাকলেও বাস্তবে প্রয়োগ নেই। তাই রাজ্যকে খুব তাড়াতাড়ি কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ডঃ অর্চনা ভাট নামের এক চিকিৎসকের দায়ের করা মামলার পরই এই গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে আদালত। তিনি দাবি করেছিলেন যে, নয় মাসের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য আলাদা সুরক্ষিত হেলমেট এবং সিট বেল্টের মতো কোনও প্রযুক্তি নিয়ে আসতে। কারণ, এগুলি বাজারে সহজে পাওয়া যায় না। তাই নিয়ম থাকলেও বাবা-মায়েরা তা প্রয়োগ করতে পারছে না।
এদিকে রাজ্য সরকার আদালতে জানিয়েছিল, শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চলছে। হেলমেট ও হারনেস প্রস্তুতিকারকদের সঙ্গে বৈঠক ডাকা হয়েছে। কিন্তু শিশুদের জন্য বিশেষ হেলমেট এবং হারনেস এখনও পর্যন্ত গবেষণা ও পরীক্ষার পর্যায়ে। প্রস্তুতি সম্পন্ন হতে মোটামুটি আরও পাঁচ থেকে ছয় মাস লাগবে। তবে একথা শুনে বিচারপতির স্পষ্ট মন্তব্য, সরঞ্জাম নেই বলে নিয়ম প্রয়োগ করতে দেরি হতে পারে না। ছয় মাসের মধ্যেই সমস্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ দেশজুড়ে বাড়ল পেট্রোল, ডিজেলের দাম! কলকাতার রেট কত?
উল্লেখ্য, শহরের ভিড়ভাট্টায় প্রতিদিন দুই চাকার গাড়িতে ছোট শিশুরা ওঠে। অনেক ক্ষেত্রে তারা ঠিক মতো বসতে পারে না বা হেলমেট থাকে না। পাশাপাশি হঠাৎ ঝাঁকুনিও সামলাতেও পারে না। আর বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের মাথা এবং মেরুদন্ড খুবই নরম হয়। সে কারণে সামান্য দুর্ঘটনাও গভীর ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই এবার সর্বোচ্চ গতিসীমা নির্ধারণ আর শিশুদের জন্য বিশেষ হেলমেট এবং হারনেস আনার নির্দেশ হাইকোর্টের।