প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ক্রমেই ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা বাংলাদেশের কোষাগারে, আর এমতাবস্থায় হঠাৎ করেই অন্তর্বর্তী সরকার জরুরী পরিস্থিতিতে অসংখ্য ট্রেন ভাড়া করে বসলেন। তাও আবার একটা-দুটো নয়, একসঙ্গে ৮ জোড়া ট্রেন। হিসাব করলে যার খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ লক্ষ টাকারও বেশি। তুমুল হৈ চৈ পড়ে গেল গোটা ঘটনায়। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের? প্রকাশ্যে এল আসল সত্যিটা।
৮ জোড়া ট্রেন ভাড়া বাংলাদেশের!
প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামীকাল অর্থাৎ ৫ আগস্ট, মঙ্গলবার, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হতে চলেছে। আর সেই ঘোষণাপত্রটি পথ করতে চলেছে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তাই এইমুহূর্তে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এই অনুষ্ঠানে যেমন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন ঠিক তেমনই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে ছাত্র-যুবদের উপস্থিতিও নজর কাড়তে চলেছে আগামীকালের অনুষ্ঠান। তাই এবার সেই ছাত্র-যুবদের আনতে আট জোড়া ট্রেন ভাড়া করল অন্তর্বর্তী সরকার।
খরচ পড়বে কত?
গতকাল অর্থাৎ রবিবার, বাংলাদেশের রেলপথ মন্ত্রণালয়কে, জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসা ছাত্র-জনতার জন্য ট্রেন ভাড়া করার বিষয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর চিঠি দেয়। সেই চিঠিতে বলা হয়েছিল ট্রেনগুলোকে দুপুর ২টো থেকে ৩টের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাতে হবে। এবং কর্মসূচি শেষে রাত ৮ থেকে ৯টার মধ্যে নির্ধারিত গন্তব্যের উদ্দেশে ফিরতি যাত্রা শুরু করতে হবে। যার দরুন এবার বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয় আট জোড়া অর্থাৎ ১৬ টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করল। জানা গিয়েছে, এই ট্রেন ভাড়া করতে খরচ পড়বে প্রায় ৩০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। তবে সেক্ষেত্রে সেই ভাড়া পোহাতে হবে না ছাত্র যুবদের, সেটি পরিশোধ করবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
কখন কোথা থেকে ছাড়বে ট্রেন?
আগামীকাল, মঙ্গলবার সকাল বা দুপুরের মধ্যে এই বিশেষ ১৬টি ট্রেন রাজশাহী, রংপুর, ফরিদপুর, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ সহ একাধিক জায়গা থেকে ট্রেনগুলি আসবে। এবং তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হবে ঢাকায়। অনুষ্ঠান শেষে আবার তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই রেলওয়ের কর্মকর্তারা চালু করা বিশেষ ট্রেনগুলো পরিচালনার জন্য একটি সময়সূচি তৈরি করেছে। সেই সূচি অনুযায়ী রংপুর থেকে আসা ট্রেনটি আজ রাত সাড়ে ১১টায় যাত্রা শুরু করবে। চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহী থেকে আগামীকাল ভোরে ছাড়া হবে। তবে ঢাকার আশপাশের জেলা যেমন গাজীপুর, নরসিংদী ও ফরিদপুর কাছাকাছি থাকায় সেখান থেকে ট্রেন ছাড়বে দুপুরের আগে। অনুষ্ঠান শেষে দূরের গন্তব্যের ট্রেনগুলো আগে ফিরতি যাত্রা শুরু করবে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে সাংসদদের নিয়ে মহাবৈঠক মমতার! ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন অভিষেক
উল্লেখ্য, গত বছর ৫ আগস্ট কোটা আন্দোলনের জেরে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেখতে দেখতে সেই ঘটনার এক বছর হতে চলল। অসংখ্য লোকের মৃত্যু হয়েছিল সেই আন্দোলনে। সেই কারণে, গত বছরের জুলাই আন্দোলনকে মনে রাখতেই বাংলাদেশে আগামীকাল জুলাই সনদপত্র বা ঘোষণাপত্র তৈরি করা হয়েছে। আগে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় আওয়ামী লিগ সরকার তাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে এভাবে ট্রেন ভাড়া করে লোকজন আনত। কিন্তু এবার সেই পন্থা অবলম্বন করতে চলেছে জামায়াতে ইসলামী।