হাইকোর্টের নির্দেশে অনুদান বন্ধ! এবার পুজো হওয়া নিয়ে আশঙ্কা শিলিগুড়ির কাশ্মীর কলোনির

Durga Puja Grant

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: হাইকোর্টের নির্দেশে এবছর রাজ্য সরকারের দেওয়া দুর্গাপূজার অনুদান (Durga Puja Grant) থেকে বঞ্চিত হল শিলিগুড়ির (SIliguri) তিন ক্লাব! তবে কি হবে না এবছর পুজো? উল্লেখ্য গত কয়েক বছর ধরে দুর্গা পূজার জন্য ক্লাবগুলিকে অনুদান দিয়ে আসছে রাজ্য সরকার। ২০২৪-এ পুজো কমিটি গুলিকে অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়েছিল ৮৫,০০০ টাকা, এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার। সঙ্গে বিদ্যুতের বিলেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ক্লাবগুলি অনুদানের খরচ নিলেও হিসেব দিচ্ছে না ঠিক করে, যার জেরে এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা হাইকোর্ট।

পুজো বন্ধের মুখে শিলিগুড়ির কাশ্মীর কলোনির

গতকাল অর্থাৎ বুধবার, হাইকোর্টের বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল যে গত বছরের পুজোর অনুদানের হিসেব কটি ক্লাব দিয়েছে আর কটি ক্লাব দেয়নি, তার উত্তরে রাজ্য সরকার জেলা এবং শহর মিলিয়ে ২৮৭৬ ক্লাবকে টাকা দেওয়ার হিসেবে দেয়। যার মধ্যে শিলিগুড়ির তিন ক্লাবের তরফ থেকে টাকার হিসেব পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রাজ্য। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, যে সব ক্লাব গত বছরের অনুদানের কোনও হিসেব দেয়নি, তাদের অনুদান দেওয়া যাবে না। এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে ক্লাবগুলিকে। আগামী এক মাসের মধ্যে যে ক্লাব হিসেব দিতে পারবে, তারাই অনুদান পাবে। আর তাতেই কপাল পুড়ল শিলিগুড়ি কাশ্মীর কলোনি দূর্গা পূজা কমিটির।

কেন পুজো বন্ধের সিদ্ধান্ত?

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এবছর রাজ্য সরকারের দেওয়া দুর্গাপূজার অনুদান থেকে বাদ পড়তে চলেছে শিলিগুড়ি কাশ্মীর কলোনি দূর্গা পূজা কমিটি। কারণ রাজ্যের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী এই ক্লাবও গত বছরের পুজোর অনুদানের কোন হিসেব রাজ্য সরকারকে দেয়নি। এদিকে পুজো প্রায় দোরগোড়ায় এসে গিয়েছে, মাঠ জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে প্যান্ডেল প্রস্তুতির পর্ব, এমতাবস্থায় পুজোর অনুদান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্গা পুজা করা নিয়ে সংশয়ে পড়লেন পুজা উদ্যক্তারা।

হাইকোর্টের নির্দেশে অনুদান বন্ধের প্রসঙ্গে পুজো কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে রাজ্য সরকারের অনুদান বন্ধ হলে এ বছর তারা পুজো বন্ধ করতে বাধ্য হবে। তার কারণ কাশ্মীর কলোনি এলাকায় যে সমস্ত রেল কোয়ার্টার রয়েছে তার মধ্যে বেশিরভাগ রেল-কোয়ার্টারই বর্তমানে ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। তাই সে ক্ষেত্রে এলাকা থেকে যাওয়া বা চাঁদা উঠতো এখন সেই পরিমাণ চাঁদা ওঠার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। তার উপর জিনিসের অত্যাধিক দামের কারণে পুজো করতে যে পরিমাণ খরচার প্রয়োজন তা সরকারের সাহায্য ছাড়া করা যাবে না। তাই পুজো করা সম্ভব হবে না বলে স্পষ্ট জানালেন পুজো কমিটির সদস্য রনিত রায়। এবার দেখার পালা রাজ্য এব্যাপারে কী ভূমিকা পালন করে।

আরও পড়ুন: ‘খাবারে মেশানো হচ্ছে শৌচাগারের জল!’ TMCP-র প্রতিষ্ঠা দিবস নিয়ে ভিডিও পোস্ট শুভেন্দুর

প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের পুজো অনুদানের ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ পুজো কমিটিগুলির ওপর বড় প্রভাব পড়লেও এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই সমর্থন করেছেন। বিজেপি কাউন্সিলর তথা শহরের অন্যতম পুজো কমিটির উদ্যোক্তা সজল ঘোষ বলেন, “কোনও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের উচিত নয়, সরকারি টাকা খেলা-মেলা, দুর্গা পূজা বা নমাজে খরচ করা। ট্যাক্সের টাকায় সরকারের উচিৎ মানুষের উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”

Leave a Comment