হারতে হারতে জয়! আফ্রিকার সেরা দাবাড়ুকে পরাস্ত করে ইতিহাস দিব্যার

Divya Deshmukh Wins Her First game at the FIDE Grand Swiss tournament

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: প্রবল ইচ্ছে শক্তির কাছে হার মানল পুরনো ব্যর্থতা। একবার শাহরুখ খান বলেছিলেন, হার কার জিতনে বালে কো বাজিগর কেহেতে হে! ভারতীয় দাবাড়ু দিব্যা দেশমুখের ক্ষেত্রে বোধ হয় ওই একটা কথা মন্ত্রের মতো কাজ করেছে। তা না হলে, মাত্র 19 বছর বয়সে ফিডের টুর্নামেন্টে ওপেন সেকশনে কেন কেউ লড়তে যাবেন? একেক জন খেলোয়াড়ের হাত পাকা করতে যেখানে বছরের পর বছর সময় লেগে যায়, সেই পর্বে দাঁড়িয়ে পরাস্ত হয়েও হাল ছাড়েননি দিব্যা। আর তাতেই বদলে গেল নাগপুরে তরুণীর ভাগ্য (Divya Deshmukh Wins)।

হেরেও জিতে গেলেন দিব্যা দেশমুখ

ফিডের টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ডে নিজের মেন্টর অভিমন্যু পুরানিকের কাছে একেবারে বাজে ভাবে পরাস্ত হন ভারতের দিব্যা। এরপর দুটো রাউন্ড ড্র করেন তিনি। তাতেও কি শিক্ষা হয়নি তাঁর? প্রশ্নটা যখন নানা মহলে উঠবে উঠবে করছে ঠিক সেই আবহে, বাজিমাত করলেন দিব্যা। তবে ইতিহাস তৈরির আগে ভারতীয় তরুণী বলেছিলেন, যদি সমস্ত রাউন্ডও হেরে যাই, বদলে যদি কিছু শিখতে পারি আমি ঠিক থাকব।

কে বলতে পারে, হয়তো সেটাই যেন জয়ের মূল মন্ত্র হয়ে গিয়েছিল দিব্যা দেশমুখের। ভুল করতে করতেও যে জেতা যায় সেটা হয়তো দিব্যার থেকেই শেখা উচিত পরবর্তী প্রজন্মের দাবাড়ুদের। ফিড টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ডে পরাজয় এবং বাকি দুটিতে ড্র করার পর পরের রাউন্ডেই খেল দেখালেন দিব্যা।

এদিন, আফ্রিকার সেরা দাবাড়ু, বিশ্ব র‍্যাঙ্কিয়ে যার অবস্থান 94 নম্বরে, সেই আমিন বসেমের সাথে অসম লড়াইয়ে একচালেই জয় তুলে নেন দিব্যা দেশমুখ। যার বিশ্ব র‍্যাঙ্কিং ছিল 761। বলা চলে, র‍্যাঙ্কিয়ে আফ্রিকার সেরা দাবাড়ুর থেকে 666 ধাপ পিছিয়ে থেকেও নিজের মনের কাছে এগিয়েছিলেন দিব্যা।

তবে আফ্রিকার আমিনের বিরুদ্ধে দিব্যা যে সহজেই জয় নিশ্চিত করেছিলেন তেমনটা নয়। শুরুটা একেবারেই মন মতো হয়নি তাঁর। বসেম দশম চাল থেকেই দেশমুখের উপর চাপ বাড়াতে থাকে। ষোড়শ চালে পুরোপুরি অ্যাডভান্টেজ তুলে নেন তিনি। তবে হাল ছাড়েননি দিব্যা। দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে গিয়েছিলেন নিজের থেকে শতগুনে এগিয়ে থাকা প্লেয়ারের বিরুদ্ধে। আর তাতেই ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে তাঁর।

Divya Deshmukh Wins Her First game at the FIDE Grand Swiss tournament

অবশ্যই পড়ুন: জেমি ম্যাকলারেনকে নিয়ে অবশেষে সুখবর! স্বস্তিতে মোহনবাগান

সাফল্য নিশ্চিত করার পর ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে দিব্যা বলেছিলেন, আজ আমি পুরো ওপেনিং ভুলে যাই। শুরুটা ভয়ানক খারাপ ছিল। ও প্রচন্ড চাপে রেখেছিল আমাকে। তবে আমি খুশি যে ফিরে আসতে পেরেছি। দেওয়ালে পিঠ থেকে যাওয়ার পরও সেখান থেকে ম্যাচ ঘোরানোটাই ছিল আসল কৃতিত্ব।

দিব্যার কথায়, ধৈর্য ধরে খেলতে খেলতে 33তম চালে অপ্রত্যাশিত আঘাত হেনেছিলাম। বুদ্ধিদীপ্ত ভঙ্গিতে শেষ লগ্নে প্রতিপক্ষের রক্ষাকবচ ভেঙে দিয়ে জয় নিশ্চিত করতেই দিব্যা বলেন, ওর বেশ কয়েকটি চাল আমার দারুন লেগেছে। বলা বাহুল্য, 43তম চালে আফ্রিকার সেরা দাবারুর চেকমেট হওয়াটা অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত হলেও, দিব্যার কাছে ছিল শুধুই সময়ের অপেক্ষা।

Leave a Comment