বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: জুলাই গণহত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরই শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আর সেই আবহেই ফের ওপার বাংলার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত চেয়ে ভারতকে চিঠি দিল বাংলাদেশ (Bangladesh Letter To India)। সে কথা ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানিয়ে দিয়েছেন মহম্মদ ইউনূসের বিদেশ উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন। তাঁর কথায়, “শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামানকে ফেরত চেয়ে আমরা ভারতকে চিঠি পাঠিয়েছি। শুক্রবার দিল্লির বাংলাদেশ দূতাবাস মারফত এই চিঠি পাঠানো হয়েছে ভারতের বিদেশমন্ত্রককে।”
যেকোনও প্রকারে হাসিনাকে ফেরত চায় বাংলাদেশ
রবিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশের বর্তমান বিদেশ উপদেষ্টা, তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, “হাসিনাকে ফেরত চেয়ে আমরা আগেই নয়া দিল্লিকে চিঠি লিখেছিলাম। তবে সেই চিঠির উত্তর আজও পাইনি। যদিও এই মুহূর্তে পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। শেখ হাসিনাকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ভারতের সঙ্গে আমাদের চুক্তি আছে। ফলে হাসিনাকে ফেরত আনতে অফিসিয়াল ভাবে আমরা চিঠি দেবই।”
বলাই বাহুল্য, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছাড়া হওয়ার পর ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এরপর বাংলাদেশে ইউনূস শাসন প্রতিষ্ঠা হতেই বারবার ওপারের শাসককে নিয়ে নানান মন্তব্য করেছেন হাসিনা। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে ঘটে চলা নানান অনৈতিক কার্যকলাপ এমনকি হিন্দুদের উপর হওয়া অত্যাচারের ঘটনাতেও সোচ্চার হয়েছিলেন তিনি। যদিও সেসব বিষয়ে একেবারেই সহ্য হয়নি ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের। যা নিয়ে বেশ কয়েকবার ভারতের কাছে হাসিনাকে সংবাদমাধ্যম থেকে দূরে রাখার অনুরোধ জানিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার মৃত্যুদণ্ডের আদেশকে সামনে রেখে হাসিনাকে ফেরত পেতে উঠে পড়ে লেগেছে ইউনূস সরকার।
অবশ্যই পড়ুন: বাবার পর হাসপাতালে ভর্তি হবু স্বামী পলাশ! নিমেষে স্মৃতির জীবনে নেমে এল বিষাদ
কী পদক্ষেপ নেবে ভারত?
শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানোর পর ভারত কোন পথে হাঁটবে তা নিয়ে উঠেছিল একাধিক প্রশ্ন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে নয়া দিল্লি থেকে হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানো হবে কিনা তা নিয়ে যখন চারিদিকে প্রশ্নের ছড়াছড়ি সেই আবহে ভারত কোন পথে যায় তার উত্তরে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, জনমত অর্থাৎ সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ ছাড়াই বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের কোনও আবেদনে ভারত সারা দেবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। তাছাড়াও 2013 সালে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে যে প্রত্যর্পণ চুক্তি হয়েছিল সেই চুক্তিতে স্পষ্ট বলা আছে, দুই দেশের মধ্যে যে কেউ রাজনৈতিক অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রত্যর্পণ খারিজ করতে পারে। এবার হয়তো সেই পথেই হাঁটছে নয়া দিল্লি..