প্রীতি পোদ্দার, হুগলি: এইমুহুর্তে পশ্চিমবঙ্গে শিল্প নিয়ে যে কোনও রকম টালবাহানা সহ্য হবে না তা বরাবরই বলে এসেছে মমতা সরকার। তাইতো রাজ্যের শিল্প ব্যবস্থাকে আরও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যেতে একের পর এক পরিকল্পনা করে চলেছে প্রশাসন। এখন রাজ্যে অনেক শিল্পপতি বিনিয়োগ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। রাজ্য জুড়েই বিভিন্ন জেলায় শিল্প স্থাপন এবং বিনিয়োগের কাজ চলছে। এমতাবস্থায় শিল্প নিয়ে এক বড় আপডেট সামনে উঠে এল। হুগলির হিন্দুস্তান মোটরসের (Hindustan Motors Land) ৩৯৫ একর জমিতে এবার রাজ্যের উদ্যোগে তৈরি হতে চলেছে শিল্প।
হিন্দুস্তান মোটরসের জমিতে তৈরি হবে শিল্প!
হুগলির হিন্দুস্তান মোটরসের ৩৯৫ একর জমি নিয়ে বিগত কয়েক মাস ধরে নানা বিতর্কের মধ্যে পড়তে হয়েছিল প্রশাসনকে। এরপর বহু অপেক্ষার পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যে উত্তরপাড়া-হিন্দমোটরে দীর্ঘদিন অব্যবহৃত হিন্দুস্তান মোটরসের ৩৯৫ একর জমি রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে ফেরত পেয়েছে রাজ্য। আর সেই জমি হাতে পেতেই সময় নস্ট না করে শিল্পের উপযোগী করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। আর সেই মতো জমির বিস্তারিত সমীক্ষার কাজ শুরু করে দিল রাজ্য শিল্পন্নয়ন নিগম। জমির প্রকৃতি, উচ্চতা, প্রাকৃতিক সীমানা থেকে শুরু করে ভবিষ্যৎ পরিকাঠামো পরিকল্পনার জন্য প্রয়োজনীয় সব তথ্য সংগ্রহের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
সমীক্ষা চালানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
রিপোর্ট মোতাবেক হুগলির হিন্দুস্তান মোটরসে জমির সমীক্ষা এবং শিল্প বাণিজ্য স্থাপনের পরিকল্পনায় ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন এর অন্তর্গত রাজ্য শিল্পন্নয়ন নিগম। এছাড়াও সমীক্ষা পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন দক্ষ ভূমি-প্রযুক্তি ও সমীক্ষার ইঞ্জিনিয়ারিং বিশেষজ্ঞরা। মৌজা মানচিত্রে সমীক্ষা তথ্য বসানো, D-GPS ভিত্তিক রেফারেন্স পিলার স্থাপন, জমির সঠিক লেভেল মাপ এবং কন্টুর লাইন প্রস্তুত ইত্যাদি কাজ করা হবে এই জমিতে। পাশপাশি হুগলির হিন্দুস্তান মোটরসে জমিতে শিল্পপ্লট তৈরি করার জন্য জমির চরিত্র নির্ধারণ এবং প্রযুক্তিগত ভিত্তির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও জলনিকাশী ব্যবস্থা, সীমানা তৈরি-সহ একাধিক বিষয়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: AI দিয়ে যাচাই হবে গুণমান, খারাপ হলেই শাস্তি! ১৫ হাজার কিমি রাস্তা তৈরি করবে নবান্ন
প্রসঙ্গত, হুগলির হিন্দুস্তান মোটরসের ৩৯৫ একর জমিটি কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথোরিটির অন্তর্গত। অবস্থানের দিক থেকে এই জমির একদিকে যেমন রয়েছে জিটি রোড, অন্যদিকে হিন্দ মোটর রেলস্টেশন এবং আরেক দিকে বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন রয়েছে। অর্থাৎ অবস্থানগতভাবে এই জমি বাংলার শিল্পের উন্নতিতে এক বড় নজির গড়ে উঠতে চলেছে। পাশপাশি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও ব্যাপক উন্নয়ন আসতে চলেছে। হিন্দমোটরের জমিতে ফের বাজবে কারখানার সাইরেন, শ্রমিকের হাসি ও শিল্প উৎপাদনের শব্দ, সম্পূর্ণ বদলে যাবে বাংলার শিল্পের অর্থনৈতিক কাঠামো।