১০০ দিনের কাজ নিয়ে আপত্তি নেই কেন্দ্রের! হাই কোর্টের নির্দেশে বড় সিদ্ধান্ত

MGNREGA

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: রাজ্যে আর্থিক তছরুপের অভিযোগে বেশ কয়েকটি প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। যার মধ্যে অন্যতম হল মহাত্মা গান্ধী গ্রামীণ কর্ম প্রকল্প (MGNREGA)। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ১০০ দিনের কাজের অধীনে থাকা দিনমজুরির অর্থ পাচ্ছে না বাংলা। এই নিয়ে রাজ্যের শাসকদল একাধিকবার সোচ্চার হয়েছে। দিল্লিতেও দাবি পেশ করেছেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু কোন কিছুতেই সমস্যা সমাধান হয়নি। এবার কেন্দ্রকে বাংলায় দ্রুত একশো দিনের কাজ শুরুর কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়কেই প্রাধান্য দিল

উল্লেখ্য গত তিন বছর ধরে শ্রমিকদের প্রাপ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রত্যেকবারই তাঁদের আবেদন প্রত্যাখান করেছে কেন্দ্র। আর এই অবস্থায় শেষমেশ ‘পশ্চিমবঙ্গ খেতমজুর সমিতি’ হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে। গত জুন মাসে সেই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্ট এক ঐতিহাসিক রায় দেয়। এদিকে সেই রায় মানেনি কেন্দ্র, তাই পাল্টা রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে উঠেছিল সেই মামলা। কিন্তু সেখানেও ধাক্কা খেল কেন্দ্র এবং হাই কোর্টের রায়কেই মান্যতা দেওয়া হল। ফের সেই মামলার আজ শুনানি শুরু হল হাইকোর্টে।

মত বদল কেন্দ্রের আইনজীবীর

রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ অর্থাৎ শুক্রবার, কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চে ১০০ দিনের কাজের মামলা উঠেছিল। সেখানে দুই পক্ষের মতামত শোনার পর আদালত কেন্দ্রকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে বাংলায় দ্রুত একশো দিনের কাজ শুরু করতে হবে। পাশাপাশি বকেয়া টাকা নিয়ে হলফনামা আদানপ্রদানের জন্য একমাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আর তারপরেই কেন্দ্রীয় অবস্থানও মুহূর্তের মধ্যে পরিবর্তন হয়ে গেল। এতদিন যেখানে রাজ্যকে বরাদ্দ টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করা হচ্ছিল সেখানে দাঁড়িয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে দ্রুত কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে কোনও আপত্তি নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিল কেন্দ্রের আইনজীবী। তাই এককথায় বলা যায় এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের একটি বড় আইনি জয় হয়েছে।

আরও পড়ুন: অঙ্কে স্নাতক হয়েও ‘দাগি’র তালিকায় ভাইয়ের নাম! SSC-র বিরুদ্ধে মামলা শালবনির বিধায়কের

উল্লেখ্য ‘পশ্চিমবঙ্গ খেতমজুর সমিতি’ তাদের মামলায় শুধুমাত্র বকেয়া মজুরিই দাবি করেনি, পাশাপাশি এতদিন টাকা আটকে রাখার জন্য ০.০৫ শতাংশ হারে সুদ দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছে। তবে সুদের বিষয়টি এখনও বিচারাধীন থাকলেও, মূল প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় রাজ্যের গরিব মানুষজন আবার কাজ ফিরে তাদের আর্থিক দুর্দশা কিছুটা হলেও লাঘব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Leave a Comment