১৪ লক্ষ টাকা দিলে চাকরি! কে এই অরিন্দম পাল? প্রকাশ্যে এল আসল পরিচয়

SLST Examination

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ১৪ লক্ষ টাকা দিলেই মিলবে শিক্ষক পদের চাকরি! ফের নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতির খবর রটতেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। উল্লেখ্য, সুপ্রিম নির্দেশ মেনে অবশেষে সেপ্টেম্বরের ৭ ও ১৪ তারিখ হতে চলেছে SSC পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় আর যাতে কোনওরকম কোনও ত্রুটি না থাকে, তাই প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এমতাবস্থায় সমাজমাধ্যমে পরীক্ষা (SLST Examination) সংক্রান্ত একটি পোস্ট নজরে আসে পুলিশের। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় নেটিজেনদের মধ্যে। কিন্তু পুলিশি তদন্ত শুরু হতেই বেরিয়ে আসে এই ঘটনার আসল সত্য।

ভাইরাল পোস্ট

অরিন্দম পাল নামে এক সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারী একটি SSC সংক্রান্ত পোস্ট করেছিলেন। তিনি সেখানে লেখেন, “আমার বাড়ি মুর্শিদাবাদ। গত দু’দিন আগে আমার ফোন নম্বরে ফোন আসে। দিয়ে বলে SLST এক্সাম পাশ করে চাকরি করতে চাও? মোট ১৪ লক্ষ টাকা লাগবে। প্রশ্নপত্র দু’দিন আগে পেয়ে যাবে। মুর্শিদাবাদ থেকে পরীক্ষার দু’দিন আগে বর্ধমান নিয়ে যাবে। পরীক্ষার প্রশ্ন পৌঁছে দেবে। তারপর দিন ৫ হাজার টাকা দিতে হবে। ইন্টারভিউয়ের সময় ৪ লাখ লাগবে। আর বাকিটা চাকরি পাওয়ার পর। তাহলে কী এবার এইভাবে প্রতারণা হবে? প্রশ্নপত্র লিক হয়ে যাবে?” শুক্রবার ওই ফেসবুক পোস্ট নজরে আসে পুলিশের। তারপরই বেরিয়ে আসে আসল সত্য।

কে এই অরিন্দম পাল?

সোশ্যাল মিডিয়ায় অরিন্দম পালের চাকরির পরীক্ষা বিষয়ক এই পোস্ট ভাইরাল হতেই এই পোস্টের সত্যতা খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওই ফেসবুক প্রোফাইলের যে মালিক তিনি একজন গৃহশিক্ষক এবং তাঁর বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার মাংরুল গ্রাম পঞ্চায়েতে। এবং তিনি যেই পোস্টটি করেছেন সেটি ভুয়ো এবং পরীক্ষার্থী এবং সরকারকে অপদস্থ করার জন্য অরিন্দম উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ওই মিথ্যা পোস্ট করেছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। তাই সমাজমাধ্যমে এই গুজব পোস্ট প্রচার করার কারণে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন অভিযুক্ত অরিন্দম পাল।

অভিযুক্তকে গ্রেফতার

রিপোর্ট অনুযায়ী গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ বাড়ি থেকে অভিযুক্ত অরিন্দম পালকে পাকড়াও করে। জানা গিয়েছে, আজ অর্থাৎ শনিবারই বছর ত্রিশের ওই যুবককে আদালতে হাজির করানো হবে। অরিন্দমের ফেসবুক প্রোফাইল চেক করলে জানা যাবে, তিনি ২০১৬ সালে ঘাটাল কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছেন। এবং রাজনৈতিক পরিচয়পত্র হিসেবে জানা গিয়েছে তাঁর সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। তাইতো অরিন্দম ওরফে টুকলু বরাবর সরকার বিরোধী পোস্ট করে থাকে। আপাতত, অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে ভুয়ো প্রচারের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের তরফে।

আরও পড়ুন: ৫৭০৫ কোটির সম্পত্তি! ইনিই হলেন ভারতের সবথেকে ধনী মন্ত্রী

প্রসঙ্গত, তদন্তকারীদের মাধ্যমে গোটা ঘটনার সত্যতা বিচার করে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জানিয়েছেন যে, ‘‘আগামী ৭ এবং ১৪ স্কুল সার্ভিস কমিশনের SLST পরীক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করতে, সাধারণ মানুষ তথা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশাসন এবং সরকারি বিরোধী করে তোলার অপচেষ্টা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই যে ব্যক্তি এই কাজ করেছেন, তাঁকে শনাক্ত করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে শীঘ্রই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’’

Leave a Comment