প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ১৭ বছর পর অবশেষে রায়দান আদালতের! ২০০৮ সালের মুম্বই মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় সব অভিযুক্তদের আজ বেকসুর খালাস করে দিল মুম্বইয়ের এনআইএ স্পেশাল কোর্ট। এদিকে এই একই মামলায় এনআইএ তদন্তভার নেওয়ার পর প্রত্যেকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ ছাড়াও একাধিক অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু উপযুক্ত তথ্যের অভাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল আদালত।
ঠিক কী ঘটেছিল?
ANI এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের রাতে, মুম্বই থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে, মালেগাঁওতে ভিক্কু চকের কাছে এক ভয়ংকর বিস্ফোরণ হয় একটি বাইকে। আর ওই বিস্ফোরণে শতাধিক ব্যক্তি আহত হওয়ার পাশাপাশি ৬ জন মুসলিমের মৃত্যু হয়েছিল। সেই সময় তদন্তে নেমে প্রজ্ঞা ঠাকুরের নামে ওই বাইকের রেজিস্ট্রেশন পাওয়া যায়। তারপরেই এই গোটা বিস্ফোরণ এর পরিকল্পনার অভিযোগে ওঠে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা সাধ্বী প্রজ্ঞা ও ভারতীয় সেনার কর্নেল পুরোহিতের বিরুদ্ধে। এমনকি অবসরপ্রাপ্ত মেজর রমেশ উপাধ্যায়, অজয় রাহিকর, সুধাকর দ্বিবেদী, সুধাকর চতুর্বেদী ও সমীর কুলকার্নির বিরুদ্ধেও অপরাধমূলক কার্যকলাপ অধীনে মামলা দায়ের করা হয়।
এপ্রিল মাসেই শেষ হয়েছিল শুনানি
২০০৮ সালের মালেগাঁও বোমা বিস্ফোরণ নিয়ে সেই মামলা এক দশক ধরে বিচার চলছিল। রাষ্ট্রপক্ষ ৩২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে, যাদের মধ্যে ৩৪ জন সাক্ষীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। প্রাথমিক তদন্তটি মহারাষ্ট্র সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড অর্থাৎ ATS পরিচালনা করে। বর্তমানে এই মামলায় ৭ অভিযুক্তই জামিনে মুক্ত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের শুনানি এবং চূড়ান্ত যুক্তি উপস্থাপনের পর চলতি বছর গত ১৯ এপ্রিল আদালত তার রায় সংরক্ষণ করেছিল। সেই সময় আদালত জানিয়েছিল যে, এই মামলার শুনানি এপ্রিল মাসে শেষ হয়েছে ৷ কিন্তু, মামলার প্রকৃতির কারণে, যেখানে এক লক্ষেরও বেশি পৃষ্ঠার প্রমাণ এবং নথি রয়েছে, রায় দেওয়ার আগে সমস্ত রেকর্ড পর্যালোচনা করার জন্য অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন ছিল। আজ অবশেষে মুম্বইয়ের স্পেশাল কোর্টে রায়দান করা হল।
আরও পড়ুন: পুজোর অনুদান থেকে শুরু করে SIR, বন্যা! একাধিক বিষয় নিয়ে ডিএমদের তলব নবান্নে
কী কারণে এই সিদ্ধান্ত আদালতের?
মুম্বইয়ের স্পেশাল কোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, ২০০৮ সালে মালেগাঁওয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে৷ কিন্তু বোমাটি আদেও মোটরসাইকেলে রাখা হয়েছিল কিনা তা প্রমাণ করা যায়নি। এমনকি আদালত জানিয়েছে যে, আহতদের বয়স এবং কিছু মেডিকেল সার্টিফিকেট কারচুপি করা হয়েছে। তাই আদালতের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, আদালতে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে মুম্বই মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় সব অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করে দিয়েছে।