প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত শনিবার রাতে স্কুল সার্ভিস কমিশন অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছিল। যেখানে ১৮০৬ জনের নাম উঠে এসেছে, এবার সেই নিয়ে বড় প্রশ্ন তুললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। তাঁর মতে, প্রকৃত সংখ্যা অন্তত পাঁচ থেকে ছ’হাজার হওয়া উচিত, হতবাক সকলে। এসএসসির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, গত শনিবার ৩৪ পাতার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। নবম-দশমে এবং একাদশ-দ্বাদশের অযোগ্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেই ওয়েবসাইটে। নাম এবং রোল নম্বর-সহ উল্লেখ করা হয়েছে। আর সেই তালিকা নিয়ে উথাল পাতাল পরিস্থিতি রাজ্য রাজনীতিতে।
পাঁচ থেকে ছ’হাজার হওয়া উচিত অযোগ্যের সংখ্যা
টিভি ৯ বাংলায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, অযোগ্যদের তালিকা প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এদিন জানিয়েছেন যে, “গত শনিবার রাতে অযোগ্যদের যে তালিকা প্রকাশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন, সেখানে ১৮০৬ জনের নাম রয়েছে। কিন্তু সংখ্যাটা অনেক বেশি হওয়া উচিত। ওএমআর শিটে নম্বর বদল হওয়ার পাশাপাশি একাধিক প্রার্থী পরীক্ষা না দিয়েই চাকরি পেয়েছিল। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও সুপারিশ করে নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়েছে অনেককে। এছাড়া এসএসসি যতজনকে সুপারিশ করেছিল, তার থেকে বেশি লোককে নিয়োগ করা হয়েছে। তাই, অযোগ্যদের সংখ্যা অন্তত পাঁচ থেকে ছ’হাজার হওয়া উচিত।”
কী বলছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়?
এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রকাশিত অযোগ্যের তালিকায় একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি জানিয়েছে হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মতে ওই তালিকায় দাগি শিক্ষক-শিক্ষিকারা কোন স্কুলে কাজ করত, সেটাও দেওয়া হয়নি। তাই এই তালিকার উপর কোনওভাবে নির্ভর করা যাবে না। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, “সুপ্রিম কোর্ট যে স্বচ্ছতার জন্য লিস্ট বের করতে বলেছিল, সেটা হল না। রাজ্য কত রকমের ভাঁওতাবাজি চালাবে? সুপ্রিম কোর্টকেও ভাঁওতা দিচ্ছে।”
আরও পড়ুন: চাকরিহারা শিক্ষক সুমন বিশ্বাসকে গ্রেফতারের চেষ্টা! করুণাময়ী মেট্রো স্টেশনে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি
কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়ে ফের প্রশ্ন
এছাড়াও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের অযোগ্যের তালিকা নিয়ে আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যে এই তালিকা রাজ্যে নতুন করে নিয়োগ দুর্নীতি ঘটার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই ভবিষ্যতে পরীক্ষার সময় প্রশ্নপত্র ও ওএমআর শিট সরবরাহ থেকে শুরু করে নিরাপদ কভারে সংরক্ষণ ও পরিবহণের দায়িত্ব কমিশনের হাতে না রেখে কোনও নিরপেক্ষ সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন তিনি। তাঁর মতে,সুপ্রিম কোর্টের উচিত এই বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ করা। যার দরুন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে রাজ্য সরকার কি সত্যিই স্বচ্ছতার সঙ্গে আদালতের নির্দেশ মানছে,নাকি এখনও আরও বড় কেলেঙ্কারি আড়ালে রেখে দেওয়া হচ্ছে?