১ নম্বরের জন্য SSC-তে অকৃতকার্য! করুণ অবস্থা গাজোলের ‘যোগ্য চাকরিহারা’ শিক্ষিকার

Gazole

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: চলতি বছর এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন হাজার হাজার শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী। জেলায় জেলায় কার্যত ভেঙে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। দুর্নীতির চরম শিখরে পৌঁছে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। আর এই অবস্থায় অসংখ্য পরিবার যেন অনাহারে ভেসে গিয়েছে। এরকম একই অবস্থা হয়েছে গাজোলের (Gazole) বাসিন্দা শুক্লা বিশ্বাসের। শেষপর্যন্ত উপায় না পেয়ে এবার মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেন তিনি।

অসহায় অবস্থা যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষিকার

স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬ সালের চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের তালিকায় নাম ছিল গাজোলের রামকৃষ্ণপল্লী এলাকার বাসিন্দা শুক্লা বিশ্বাসের। তিনিও বাকীদের মতোই পরীক্ষা দিয়ে যজ্ঞ চাকরি পেয়েছিলেন, কিন্তু কিছু দুর্নীতিবাজদের চক্করে সব কিছু তছনছ হতে যায়। রাতারাতি চাকরি চলে গিয়েছে। এদিকে শুক্লা দেবীর চোখের সমস্যা তো রয়েছেই। কিন্তু শত কষ্ট থাকা সত্ত্বেও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি আদালতের নির্দেশে এবারের পরীক্ষাতেও বসবেন। ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পর শেষ পর্যন্ত মাত্র ১ নম্বরের জন্য পাস করতে পারলেন না তিনি। একমাত্র রোজগেরে হিসেবে দায়িত্ব ছিল তার উপরে। এখন কিভাবে সবকিছু সামলাবেন তা নিয়ে চিন্তিত সকলে।

শোধ হয়নি ব্যাঙ্কের কিস্তির টাকা!

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে শুক্লা বিশ্বাস ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করার পর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলার শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন গোবিন্দপুর হাইস্কুলে। পরিবারের জন্য পাকা বাড়ি করবেন বলে ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়েছিলাম প্রায় ২৮ লাখ টাকা। নির্দিষ্ট ছন্দেই চলছিল সংসার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ে সর্বস্ব ভেঙে পড়ে। রাতারাতি চাকরি চলে যায় তাঁর। বহু কষ্টে চোখের সমস্যা নিয়ে দ্বিতীয়বার এসএসসি পরীক্ষা দিলেও সফল হতে পারেননি তিনি। এখন ব্যাঙ্কের কিস্তির টাকা শোধ করবেন কি করে তাই নিয়ে যেমন আতঙ্কে ভুগছে ঠিক তেমনই দু’বেলা দুমুঠো খাবার কীভাবে জোগাড় করবেন তাই নিয়েও বেশ চিন্তায় পরিবার।

আরও পড়ুন: খসড়া ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও পাঠানো হচ্ছে নোটিশ! কাদের ডাকবে কমিশন? জানুন

এসএসসি চাকরি চলে যাওয়ায় শুক্লা দেবীর মা সুচিত্রা দেবী এদিন সংবাদমাধ্যমে জানান, “আমার মেয়ে যোগ্য শিক্ষিকা ছিলেন। খুব খেটেছিল চাকরির জন্য। দিন রাত পড়াশোনা করেছিল। পরে মেয়ে পাশ করে চাকরি পাওয়ার পর সংসারে একটু সুখের মুখ দেখেছিলাম। কিন্তু এখন সামনে শুধুই অন্ধকার। খাবার জোগাড় করতে দিন রাত খাটতে হচ্ছে।” এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে শুক্লা দেবী কাতর আবেদন জানিয়ে বলেছেন, ‘হয় চাকরি দিন, না হলে এক শিশি বিষ দিন। বিষ পান করে পরিবারের সকলে একসঙ্গে আত্মহত্যা করতে চাই।’

Leave a Comment