১ লিটারে ১৭৬ কিমি! দীর্ঘ ১৮ বছর গবেষণার পর অবিশ্বাস্য ইঞ্জিন বানালেন শৈলেন্দ্র কুমার

176 km Mileage Engine

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: একবার ভেবে দেখুন তো, মাত্র এক লিটার পেট্রোলে যদি আপনার বাইক 176 কিলোমিটার মাইলেজ (176 km Mileage Engine) দেয়, তাহলে কেমন হবে? হ্যাঁ, আজকালকার দিনে পেট্রোল ডিজেলের দাম হু হু করে বাড়ছে। সাধারণত আমরা যে সমস্ত বাইক বা স্কুটি ব্যবহার করি, তা খুব বেশি হলে 40 থেকে 50 কিলোমিটার মাইলেজ দেয়।

তবে এবার সেই সংজ্ঞাকেই বদলে দিয়েছে প্রয়াগরাজের বাসিন্দা শৈলেন্দ্র কুমার সিং গৌর। জানা গিয়েছে, দীর্ঘ 18 বছরের গবেষণা ও সংগ্রাম করে তিনি একটি সিক্স-স্ট্রোক ইঞ্জিন তৈরি করে ফেলেছেন, যা শুধুমাত্র মাইলেজের দিক থেকে সেরা নয়, নয় বরং সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব।

কেন বিশেষ এই ইঞ্জিন?

জানা যাচ্ছে, এই ইঞ্জিনটি এক লিটার পেট্রোলে 176 থেকে 200 কিলোমিটার পর্যন্ত মাইলেজ দেবে। পাশাপাশি পেট্রোল, ডিজেল, সিএনজি কিংবা ইথানল, যেকোনো জ্বালানিতেই চলবে এই ইঞ্জিন। এমনকি কার্বন মনোক্সাইড নির্গমন নেই বললেই চলে। তাই পরিবেশ দূষণ নিয়ে কোনোরকম চিন্তা করতে হবে না। আর সবথেকে বড় ব্যাপার, বাইকের পারফরম্যান্স তিনগুণ বাড়াবে এই ইঞ্জিন।

উল্লেখ্য, এই ইঞ্জিন তৈরি করতে শৈলেন্দ্রবাবু শুধুমাত্র 18 বছর সময় দেননি, বরং বহু কিছু ত্যাগও করেছেন। এমনকি তার বংশ-পরম্পরার বাড়িও বিক্রি করতে হয়েছে। বর্তমানে স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন শৈলেন্দ্র। আর এই সংগ্রামের কারণে তার বড় ছেলে নবম শ্রেণীর পর পড়াশোনা ছাড়তেও বাধ্য হয়েছে। এমনকি মেয়েরাও খুব কষ্ট করে পড়াশোনা শেষ করেছে।

এক লড়াই থেকেই ল্যাবরেটরি

জানিয়ে রাখি, শৈলেন্দ্রবাবু, 1983 সালের এলাহাবাদের সিএমপি ডিগ্রি কলেজ থেকে বিএসসি পাস করেছিলেন। 2007 সালে টাটা মোটরসে কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। তবে সেখানে যাননি, বরং ইঞ্জিন নিয়েই গবেষণা চালাতে থাকেন। তিনি মোটরগাড়ি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর অনুজ জৈনের তথ্যপ্রদানে MNNIT-র মেকানিক্যাল ল্যাবরেটরিতে দীর্ঘ ছয় মাস যাবত কাজ করেছেন। এর পাশাপাশি IIT ল্যাবরেটরিতেও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ iPhone 17 সিরিজ লঞ্চের দিনক্ষণ ঘোষণা Apple-র

শৈলেন্দ্রবাবু প্রধানমন্ত্রীর কাছে এও আবেদন করেছেন যে, অটোমোবাইল কোম্পানিগুলিকে তাঁর আবিষ্কৃত এই ইঞ্জিন ব্যবহার করার জন্য উৎসাহিত করে তোলা। আর তিনি বিশ্বাস করছেন, যদি এই ইঞ্জিন গাড়িতে ব্যবহার করা হয়, তাহলে জ্বালানির খরচ যেমন একদিকে কমবে, তেমনই পরিবেশ দূষণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হবে। এখন দেখার, কবে এই ইঞ্জিন বাজারে আত্মপ্রকাশ করে।

Leave a Comment