সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতের ধনকুবেরদের কথা উঠলে আপনার মনে প্রথমে কাদের নাম আসবে? মুকেশ আম্বানি, রতন টাটা নিশ্চয়ই এদের। তবে রিপোর্ট বলছে, ভারতে এমন এক রানী রয়েছেন, যিনি দেশের সবথেকে সুন্দরী রানীর (Radhikaraje Gaekwad) তকমা পেয়েছিলেন এবং তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এমনকি তিনি এমন এক প্রাসাদে থাকেন যা মুকেশ আম্বানির ১৫ হাজার কোটি টাকার অ্যান্টিলিয়ার থেকেও বড়। কিন্তু কে সেই মহৎ রানী? জানুন আজকের প্রতিবেদনে।
কে সেই রানী?
আসলে আমরা বলছি গুজরাটের বরোদার রানী রাধিকারাজে গায়কওয়াড়ের কথা। হ্যাঁ, সম্প্রতি তিনি খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন ১১৪ বছরের পুরনো সেন্ট্রাল জেল পরিদর্শন করে। জানা যাচ্ছে, গুজরাটের বিখ্যাত লক্ষ্মী বিলাস প্যালেস যা বিশ্বের সবথেকে বড় ব্যক্তিগত আবাসস্থল, সেটাই রাধিকারাজে গায়কওয়াড়ের পরিবারের রাজপ্রাসাদ। এখানে ১৭০টি ঘর, বাগান, ঘোড়দৌড়ের এরিনা, গলফ কোর্স সহ আধুনিক সব সুবিধা রয়েছে।
বলাবাহুল্য, ফোর্বস ম্যাগাজিন রাধিকারাজেকে ভারতের সবথেকে সুন্দরী রানীর তকমা দিয়েছিল। এমনকি তিনি শুধুমাত্র রাজকীয় অভিযাত্রার দিক থেকে নন, বরং গুজরাটের শিল্প-সংস্কৃতিও রক্ষা করতেন। এমনকি নীরব, সরল আর দীপ্ত ব্যক্তিত্ব ছিল তাঁর ভিতরে। ৪৭ বছরের এই রানী বর্তমানে দুই কন্যা সন্তানের মা। কিন্তু তাঁর অভিজাত্যের থেকেও বেশি তাঁর সাদামাটা জীবনযাপন মানুষকে বেশি মুগ্ধ করে।
১১৪ বছরের জেলে হঠাৎ করেই সফর
উল্লেখ্য, বর্তমানে বরোদা সেন্ট্রাল জেলের বয়স ১১৪ বছর। ১৮৮১ সালে মহারাজা সায়াজিরাও গায়কওয়াড় এই ঐতিহাসিক জেলটি নির্মাণ করেছিলেন। সম্প্রতি রাধিকারাজে গায়কওয়াড় এই জেলটি পরিদর্শন করেন। আর তাঁর সফর নিয়েই এখন গোটা গুজরাট জুড়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। জেলে গিয়ে তিনি বন্দিদের দৈনন্দিন জীবনযাপন দেখেন, পুনর্বাসন প্রকল্পের পর্যালোচনা করে দেখেন। এমনকি কীভাবে অপরাধী ব্যক্তিরা নতুন জীবনের স্বাদ খুঁজছেন, তাও খতিয়ে দেখেন।
সবথেকে বড় ব্যাপার, রানী নিজের ইন্সটাগ্রাম পোস্টে লিখেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই বরোদা সেন্ট্রাল প্রিজন পরিদর্শনের ইচ্ছা ছিল। ১১৪ বছরের পুরনো এই স্থাপনা আজও তাঁর কাছে প্রাচীন সৌন্দর্য ধরে রেখেছে। তিনি বন্দিদের কাজও দেখেছেন। সেখানে তাঁরা প্রতি মাসে ৫০ হাজার সাফারি সুটকেস তৈরি, সাবান ডিটারজেন্ট তৈরি, কাঠের কাজ, ইউনিফর্ম ও কাপড় বোনা, পেইন্টিং ও বুক বাইন্ডিং ইউনিট সহ বিভিন্ন কাজ করে। এমনকি সেখানে তারা প্রতিদিন ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করেন।
আরও পড়ুনঃ হারিয়েছেন রাবড়ি দেবীকে, তাঁর সামনেই পরাজয়ের মুখে তেজস্বীও! কে এই সতীশ কুমার?
ঐতিহাসিক বরোদার রাজপ্রাসাদ
বলে রাখি, লক্ষ্মী বিলাস প্রসাদ বর্তমানে ৩ কোটি ৪৯ লক্ষ বর্গফুট জুড়ে বিস্তৃত রানী রাধিকারাজে গায়কওয়াড়ের সবথেকে বড় ব্যক্তিগত বাসভবন। হাউজিং ডটকমের এক রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, এই প্রাসাদে নির্মাণ করতে ১২ বছর সময় লেগেছিল এবং এটি ১৯৮০ সালে তৈরি হয়েছিল। এই প্রাসাদের নির্মাতা ছিলেন মহারাজা সায়াজিরাও গায়কওয়াড়। তাই মুকেশ আম্বানির অ্যান্টিলিয়া বর্তমানে যতই আলোচনার বিষয় হোক না কেন, লক্ষ্মী বিলাস প্রসাদের সামনে তা নিছকই ছোট। এমনকি গায়কওয়াড় পরিবারের মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকা।