সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২২ আগস্ট তিনটি নতুন মেট্রো রুট পাবেন মেট্রো যাত্রীরা। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে বেলেঘাটা, শিয়ালদা-এসপ্ল্যানেড এবং নোয়াপাড়া থেকে জয় হিন্দ অর্থাৎ বিমানবন্দর অবধি শুরু হতে পারে মেট্রো পরিষেবা। এসবের মাঝেই এবার প্রকাশ্যে এল বারাসাত মেট্রো নিয়ে বিরাট আপডেট যা শুনলে আপনিও হয়তো খুশি হয়ে যাবেন।
বারাসাত মেট্রো নিয়ে কাজ শুরু
কলকাতার বিমানবন্দর থেকে বারাসাত পর্যন্ত ইয়েলো লাইন মেট্রো (Barasat Metro) করিডোর, যা প্রযুক্তিগত এবং লজিস্টিক চ্যালেঞ্জের কারণে দীর্ঘ বিলম্বিত হয়েছিল, তা উল্লেখযোগ্যভাবে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুত বলে খবর। সূত্রের খবর, মেট্রো রেলওয়ে এখন নাকি সয়েল টেস্টিং শুরু করতে চলেছে। সেইসঙ্গে মাইকেল নগর এবং বারাসতের মধ্যে টানেল-বোরিং মেশিন (টিবিএম) স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হল লম্বা ক্রেনের ব্যবহার এড়ানো, যা পূর্বে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ফ্লাইট নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছিল এবং নিউ ব্যারাকপুর-বারাসাত অংশে দখলের সমস্যা সমাধান করা।
আরও পড়ুনঃ শুধু শিয়ালদা-এসপ্ল্যানেড নয়, ২২ আগস্ট তিনটি নতুন মেট্রো রুটের উদ্বোধন, জারি বিজ্ঞপ্তি
মূলত, বিমানবন্দর থেকে নিউ ব্যারাকপুর পর্যন্ত অংশটি কাট-এন্ড-কভার পদ্ধতি ব্যবহার করে তৈরি করার কথা ছিল, বাকি অংশটি উঁচু করে তৈরি করা হয়েছিল। টিবিএম ব্যবহার করলে ভূপৃষ্ঠের বিঘ্ন কমবে এবং ভূগর্ভস্থ প্রান্তিককরণ আরও গভীর, আক্রমণাত্মক নয়। রেলপথ মন্ত্রক কর্তৃক অনুমোদিত হলে, নোয়াপাড়া-বারাসাত করিডোরটি ১৮ কিলোমিটার থেকে ২২ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রসারিত হবে এবং বারাসাত ছাড়িয়ে আরও তিনটি অতিরিক্ত স্টেশন পাবে। মেট্রো রেলওয়ে পরামর্শদাতা সংস্থা RITES-কে সংশোধিত অ্যালাইনমেন্টের জন্য একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে, যার ফলে ১২ কিলোমিটার মাইকেল নগর-বারাসাত ভূগর্ভস্থ অংশে নয়টি স্টেশন তৈরি হবে।
২০৩০ সালের মধ্যে কাজ শেষ হবে?
বারাসাত পৌরসভার চেয়ারম্যান আশানী মুখার্জি নিশ্চিত করেছেন যে “ইয়েলো লাইনের আরও সম্প্রসারণ এবং নির্মাণ পদ্ধতি সংশোধনের জন্য মধ্যমগ্রাম এবং বারাসাত পৌর এলাকায় ভূ-প্রযুক্তিগত জরিপ এবং ভূ-প্রযুক্তিগত তদন্ত চলছে।” ২০১০-২০১১ বারাসত-নোয়াপাড়া মেট্রোরেল তৈরির ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, প্রস্তাবিত এই রেল পথটি দু’টি ভাগে বিভক্ত। প্রথমটি নোয়াপড়া স্টেশন, দমদম ক্যান্টনমেন্ট, যশোররোড, বিরাটি ও মাইকেলনগর। তার মধ্যে নোয়াপড়া ও দমদম ক্যান্টনমেন্ট এই দু’টি স্টেশন উত্তোলিত পথে, যশোর রোড স্টেশন থেকে বাকিটা পাতালপথে। দ্বিতীয় অংশটি মাইকেল নগর থেকে বারাসত পর্যন্ত। জমিজটের কারণে এই অংশে মেট্রোরেল সম্প্রসারণের কাজের সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তবে এখন এই জট কেটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে এই মেট্রো পরিষেবা শুরু হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকাশ্যে বারাসাত মেট্রোর রুট!
মাইকেল নগর থেকে গঙ্গানগর কাটাখালের নিচ থেকে ভূগর্ভস্থ পথে মধ্যমগ্রাম স্কাউট গ্রাউন্ড হয়ে যশোর রোডের সমান্তরাল পথে বারাসতের পূর্বাচল হয়ে কেএনসি রোড ধরে কাছারি মাঠ হয়ে পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্ণালী সংঘ হয়ে লোকশেড থেকে সুরিপুকুরে শেষ হবে। প্রস্তাবিত স্টেশনগুলি হল বিধানপল্লি, চৌমাথা সংলগ্ন মধ্যমগ্রাম, হৃদয়পুর, বারাসত বিদ্যাসাগর স্টেডিয়াম, কাছারি ময়দান, বারাসত ইএমইউ কারশেড, যশোর রোডের কাছে জয়পুর ও ১২নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন সুরিপুকুর। মেট্রো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জয়পুরে ভুপথে ডিপো তৈরিরও ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই মেট্রো কর্তৃপক্ষ সার্ভে করে ড্রয়িং তৈরির পর সয়েল টেস্টের অনুমতি চেয়েছে। এরপর ধাপে ধাপে পরবর্তী কাজ শুরু করা হবে বলেই জানা গিয়েছে।