সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: ভারতে নগদ লেনদেন কমানোর জন্য এবং ডিজিটাল লেনদেনকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য কেন্দ্র সরকার বহুদিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছে। আর এবার সেই পদক্ষেপকেই জোরালো করল কেরালা হাইকোর্টের (High Court Verdict) এক ঐতিহাসিক রায়। হ্যাঁ, হাইকোর্ট জানিয়ে দিল যে, 20 হাজার টাকার বেশি নগদ লেনদেনকে আর আইনি দেনা হিসেবে ধরা হবে না।
কী বলা হয়েছে মামলাতে?
আসলে এই ঘটনার সূত্রপাত একটি চেক বাউন্সের মাধ্যমেই। যেখানে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে 9 লক্ষ টাকার একটি চেক ডিজঅনার হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি নিম্ন আদালত তাকে এক বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা হিসেবে 9 লক্ষ টাকা দিতেও নির্দেশ দেয়। তবে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আপিল করেছিল অভিযুক্ত। তাঁর দাবি ছিল যে, এই পুরো টাকা নগদে লেনদেন হয়েছিল, যা আয়কর আইনের বাইরে নয়। সুতরাং, এর থেকে কোনো দেনা আইনি হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে না।
কী বলেছেন বিচারপতি?
কেরালা হাইকোর্টের বিচারপতি বলেছেন, যদি কোনো অপরাধে আদালত এমন নগদ লেনদেনকে আইনি দেনা হিসেবে মেনে নেয়, তাহলে তা অবৈধ লেনদেন হিসেবেই মানা হবে। তিনি এটিকে দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর বিপক্ষে বলে দাবি করেছেন। তিনি আরো বলেছেন, 20 হাজার টাকার বেশি নগদ লেনদেন করা মানেই আয়কর আইন লঙ্ঘন এবং যদি এর পেছনে কোনো নির্দিষ্ট কারণ না থাকে, তাহলে এর থেকে সৃষ্ট দেনাকেও আইনি হিসেবে ধরা হবে না। এটাই দেশের ডিজিটাল ইন্ডিয়ার জন্য পদক্ষেপ।
প্রসঙ্গত, ভারতের আয়কর আইন অনুযায়ী, 20 হাজার টাকার বেশি নগদ লেনদেন করলে তা বেআইনি। আর সেই আইন ভেঙে যদি কেউ নগদ টাকা ধার দিতে চেক নেয় এবং সেই চেক যদি বাউন্স খায়, তাহলে আইন মোতাবেক শাস্তির জন্য মামলা করা যাবে না, যদি লেনদেনের পিছনে সঠিক ব্যাখ্যা থাকে।
আরও পড়ুনঃ বয়স ৩.২ বিলিয়ন বছর! ঝাড়খণ্ডের সিংভূম এলাকাই নাকি পৃথিবীর প্রথম ভূমি
কী ঘটল মামলায়?
এই মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি হাইকোর্টে প্রমাণ দিয়েছিল যে, অভিযোগকারী ব্যক্তি 9 লক্ষ টাকা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না, আর লেনদেনটির সম্পূর্ণ নগদে ছিল, কোনো লিখিত চুক্তি বা ব্যাখ্যা ছিল না। তবে এই তথ্য বিচারপতি মেনে নিয়ে বলেন যে, এই রায় ভবিষ্যতের জন্য প্রযোজ্য, অতীতে প্রযোজ্য ছিল না। কিন্তু যারা এখন এই ধরনের লেনদেনে যুক্ত থাকবে, তাদেরকে আদালতের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে।