প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গোরু পাচার কাণ্ডের পর জেল খাটতে হয়েছিল বহু মাস। শেষে জামিন পেয়ে তিহাড় থেকে ফেরার পর অনেক কিছুই বদলে গিয়েছে কেষ্টর জীবনে। এমনকি বীরভূমের সভাপতি পদও চলে গিয়েছে তাঁর। তার উপর কিছুদিন আগে পুলিশকে গালিগালাজ করায় ফের খবরে শিরোনামে উঠে এসেছিলেন তিনি। আর তাতেই দলের সঙ্গে সম্পর্কে কিছুটা ছেদ পড়েছে। আর এই আবহে অনুব্রতর ফেসবুক পোস্ট দেখে রাজনৈতিক মহলে তৈরি হল এক নয়া গুঞ্জন।
মমতার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাধা!
গতকাল অর্থাৎ ২১ জুলাইয়ের আগের দিন অর্থাৎ রবিবার সমাবেশের চূড়ান্ত প্রস্তুতি দেখতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।আর সেই খবর আগাম পেয়ে তৃণমূলের অনেক মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদেরা ভিড় জমিয়েছিলেন মঞ্চের কাছেই। সেই পর্যায়েই বীরভূম জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও এসেছিলেন ধর্মতলার মঞ্চের কাছে। কিন্তু মূল মঞ্চের কাছে পৌঁছোনোর অনেক আগেই আটকে দেওয়া হয় তাঁকে।
এখনও রাগ কেষ্টর ওপর
তবে সেদিন শুধু অনুব্রত নন পাশাপাশি প্রাক্তন সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী, প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জমান, বিধায়ক ইমানী বিশ্বাসের মতো নেতাদেরও আটকে দেওয়া হয়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর কারোর সঙ্গে কোনো কথা না বলে পুলিশকে জানিয়ে দেখান থেকে বেরিয়ে যান তিনি। আর তাতেই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয় যে কেষ্টর ওপরে এখনো রাগ কমেনি মুখ্যমন্ত্রীর। এই প্রসঙ্গে অনেকেই বোলপুর থানার ঘটনাকে টেনে আনছে।
অনুব্রতর ফেসবুক পোস্টে বাড়ল জল্পনা
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, ফোনে বোলপুর থানার আধিকারিক লিটন হালদারকে গালিগালাজ করে তাঁর মা ও স্ত্রীর প্রসঙ্গে কটু কথা বলেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। সেই কারণে তাঁর উপরে রুষ্ট মমতা। যে কারণে এত দিন তিনি অনুব্রতের সঙ্গে কথা বলেননি এমনকি, রবিবার তাঁর মুখোমুখিও হতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী। সেই দুঃখে তাই ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে দেখা যায়নি বীরভূমের একদা বেতাজ বাদশাকে। তবে রাতে ঘটল আরেক ঘটনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুব্রত মণ্ডলের ফেসবুক পোস্টে দেখা গেল মমতার সঙ্গে অভিষেকের ছবি। আর তাতেই জল্পনা আরো তুঙ্গে।
আরও পড়ুন: সমাবেশ শেষে ঘণ্টাখানেকেই ঝকঝকে রাজপথ! উধাও আবর্জনার স্তূপ, বিরাট উদ্যোগ KMC-র
একসময় মমতা ছাড়া কাউকে মানেন না বলে দাবি করতেন যে অনুব্রত মণ্ডল, সে কিনা তাঁর ফেসবুক পোস্টে তাঁর নেত্রীর ছবির সঙ্গে অভিষেকের ছবি দিয়েছেন। পোস্টে দেখা যায় মমতার ছবি ৭টি, আর অভিষেকের ছবির সংখ্যা ৯টি। তবে এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী দলও। এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, “ওকে দিয়ে টাকা তোলানো হল। আর আম খেয়ে ছিবড়ের মতো ফেলে দেওয়া হল! তৃণমূলের বাকিরাও দেখুন সবটা।”
অন্যদিকে বাম নেতা মহম্মদ সেলিমও বলেন “কাজের বেলায় কাজী- এটা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। নেতাদের দিয়ে অন্যায় কাজ করানো হয়, তারপর ফেঁসে গেলে কেউ কারও নয়।”