সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এবার ইতিহাস লিখতে চলেছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। জানা গিয়েছে রাজস্থানের দেদওয়ানা-কুচামান জেলার নাওয়ান এলাকায় দেশের প্রথম উচ্চগতির ট্রেন চালানোর জন্য রেলপথ তৈরি প্রায় শেষের পথে। প্রায় পাঁচ বছরের কঠোর পরিশ্রম আজ বাস্তবায়নের দোরগোড়ায়, যা ভারতের জন্য ঐতিহাসিক মাইলফলক।
জানা যাচ্ছে, এই ট্রাকের দৈর্ঘ্য 64 কিলোমিটার। এমনকি এর মধ্যে রয়েছে 37টি বাঁক এবং অসংখ্য সেতু। এখানে ট্রেনের গতি, স্থায়িত্ব সবকিছুই পরীক্ষামূলকভাবে দেখা হবে। আর বিশেষ করে এই পরীক্ষামূলক ট্র্যাকে ট্রেন সর্বোচ্চ 220 কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা গতিতে চলাচল করতে পারবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এখানে বুলেট ট্রেন চালানোর জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হতে পারে।
ট্র্যাকের বিশেষ বিভাগ
জানা যাচ্ছে, এই ট্র্যাকটি মূলত তিনটি পরীক্ষামূলক লুপে বিভক্ত করা হয়েছে। আর সেগুলি হল—গুধা সল্টে 13 কিলোমিটার দীর্ঘ উচ্চগতির লুপ, নাওয়ানে 3 কিলোমিটার দ্রুত পরীক্ষার লুপ এবং মিথরী গ্রামে 20 কিলোমিটার বাঁক পরীক্ষার লুপ। পাশাপাশি 23 কিলোমিটার রেললাইনসহ এই ট্র্যাক বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা সম্পন্ন করবে।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, উচ্চগতির ট্র্যাক নির্মাণের কাজ প্রায় 80 শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু নাওয়ান সিটি থেকে মিথরী পর্যন্ত এখনো কাজ চলছে। আর এই প্রকল্পটি ন্যাশনাল হাইস্পিড রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের তত্ত্বাবধানেই হচ্ছে বলে সূত্র মারফত খবর।
পুরনো ট্র্যাকের ইতিহাস
এদিকে আমরা যদি একটু পিছনের দিকে ঘুরে তাকাই, তাহলে দেখতে পাব, যে রুটে এই উচ্চগতির ট্র্যাকটি তৈরি হচ্ছে, তা ব্রিটিশ শাসনের সময় জয়পুর-যোধপুর লাইনের জন্যই ব্যবহার করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে 50 বছর ধরে এই লাইনটি দখলহীন অবস্থাতে পড়েছিল। তবে দীর্ঘ সময় পর রেলওয়ে স্যাটেলাইট সার্ভের মাধ্যমে এই লাইনটির অস্তিত্ব পুনঃনির্ধারণ করা হয় এবং এতেই আধুনিক নেটওয়ার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
আরও পড়ুনঃ গুনতে হবে অতিরিক্ত ৫ টাকা! দীর্ঘ ৮ বছর পর ভাড়া বাড়াল দিল্লি মেট্রো
উল্লেখ্য, গুধা সল্ট থেকে মিথরী পর্যন্ত এই ট্র্যাকে আরসিসি এবং স্টিলের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে এবং প্রতিটি সেতুতেই নতুন অ্যান্টি ভাইব্রেশন প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে, যাতে উচ্চগতির ট্রেনের চাপ এবং কম্পনে কোনোরকম সমস্যা না হয়। এক কথায় এই প্রকল্প শুধুমাত্র ভারতীয় রেলের জন্য নয়, বরং দেশের উচ্চগতির রেল ভবিষ্যতের প্রস্তুতিকেও এক নয়া মাত্রা দেবে।