প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বছর ঘুরলেই ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনকে সামনে রেখেই একের পর এক উদ্যোগ নিয়েই চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে সাধারণের কাছে উন্নয়নের খাতা খুলে দিচ্ছেন তাঁরা। এমতাবস্থায় পশ্চিম বর্ধমান জেলার মানুষদের জন্য বড় সুখবর শোনা গেল। জানা গিয়েছে সালানপুর (Salanpur) ব্লকের কল্যাণেশ্বরী-দেন্দুয়া শিল্প এলাকায় একটি নতুন বড় ইস্পাত এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি হতে চলেছে। আর সেখানেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় দু’তিন হাজার কর্মী কাজ পাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
কর্মসংস্থান নিয়ে অভিযোগ স্থানীয়দের
উল্লেখ্য, পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুর ব্লকে যখন ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ প্রকল্প বসেছিল সেই সময় স্থানীয়দের একাংশ অভিযোগ করেছিল যে এলাকায় এত কারখানা থাকা সত্ত্বেও কেন এলাকায় কর্মসংস্থান ঠিকভাবে হচ্ছে না। শুধু তাই নয় এলাকায় কলকারখানার কারণে দূষণ এবং রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি কারখানার কর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক গাফিলতির অভিযোগও উঠছে। আর এই আবহে এবার নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। সেখানকার একাধিক কারখানার মালিকের সঙ্গে করা হল জরুরি বৈঠক। আর সেখানেই জানা গিয়েছে সালানপুর ব্লকের কল্যাণেশ্বরী-দেন্দুয়া শিল্প এলাকায় একটি নতুন বড় ইস্পাত এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি হতে চলেছে। সব মিলিয়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগও হতে চলেছে।
মালিকদের সঙ্গে বৈঠক বিধায়কদের
রিপোর্ট মোতাবেক গত শনিবার বারাবনি বিধানসভার বিধায়ক এবং আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায় বারবনি এবং আসানসোল এলাকার একাধিক কারখানার মালিক এবং তাঁদের মানবসম্পদ দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় আইএনটিটিইউসি ব্লকের দায়িত্বে থাকা মনোজ তিওয়ারি, সালানপুর ব্লকের তৃণমূলের সহ-সভাপতি বিজয় সিং এবং অন্যরা। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে সেই বৈঠক। ওইদিন বিধায়ক স্পষ্ট জানান যে, এখানে নতুন যাঁরা কারখানা করবেন তাঁদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। সেগুলি হল কারখানার ধুলো, ধোঁয়া থেকে বাড়তে থাকা দূষণের মাত্রা কমাতে হবে এবং বাইরে থেকে লোক এনে এখানে কাজ করানো যাবে না। এই বিধানসভা এলাকায় প্রচুর শিক্ষিত মহিলা আছেন, যাঁদের কারখানাগুলির অফিসে বা কম্পিউটারের কাজে লাগানো যেতে পারে।
আরও পড়ুন: জন্মদিনেই ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়ে সনিয়া গান্ধীকে নোটিস পাঠাল আদালত,
শনিবারের বৈঠকে একাধিক কারখানার মালিকদের উদ্দেশে বিধায়ক আরও একটি শর্ত আরোপ করে সেটি হল কাজের সময় বেঁধে দেওয়া। অর্থাৎ কারখানার কর্মীদের আট ঘণ্টার পরিবর্তে ১২ ঘণ্টা কাজ করানো যাবে না। এছাড়াও কারখানা কর্তৃপক্ষকে কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে টেকনিক্যাল কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। পাশাপাশি কর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়াও দ্রুত রাস্তা সংস্কারের জন্য আবেদনও জানানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে কারখানার মালিকরা স্থানীয় কর্মী নিয়োগে সবুজ সংকেত দেওয়ার পাশাপাশি বিধায়কের বাকি শর্তগুলিও যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়িত করার উদ্যোগ নেবেন বলে জানা গিয়েছে।