৩০ জুলাই লঞ্চ হবে বিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী উপগ্রহ! ইতিহাস লিখছে NASA ও ISRO

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এবার বিরাট কৃতিত্ব ফলাচ্ছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO এবং মার্কিন মহাকাশ সংস্থা NASA। হ্যাঁ, এই দুই দেশের যুগ্ম প্রয়াসে তৈরি হচ্ছে NISAR উপগ্রহ (NISAR Satellite), যা আগামী 30 জুলাই মহাকাশে পাঠানো হবে। জানা যাচ্ছে, এটি হতে চলেছে পৃথিবীর সবথেকে শক্তিশালী উপগ্রহ, যা পৃথিবীর প্রতিটি কোনায় কোনায় নজরদারি চালাবে।

কী বিশেষ রয়েছে এই NISAR-এ?

এই উপগ্রহের সবথেকে বড় বিশেষত্ব হল, পৃথিবীর যেকোনো অঞ্চলের মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার পরিবর্তন পর্যন্ত ধরা পড়বে এই রাডারে। আর পুরো পৃথিবীকে প্রতি 12 দিনে একবার করে স্ক্যান করবে এই উপগ্রহ। পাশাপাশি এটি চোখ রাখবে হিমালয় পর্বতমালা, ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূল, পাঞ্জাবের চাষের মাঠ, আমাজনের ঘন জঙ্গল সবকিছুতেই।

জানা গিয়েছে, NASA এবং ISRO এই দুই সংস্থার অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি হচ্ছে এই উপগ্রহ NISAR। আর এই উপগ্রহে রয়েছে NASA-র L-Band রাডার ও ISRO-র S-Band রাডার, যা কিনা মেঘ, গাছের পাতা, বরফ সবকিছু ভেদ করেই পৃথিবীতে স্পষ্ট ছবি পাঠাতে পারবে।

উল্লেখ্য, NISAR-এর মূল উদ্দেশ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন ভূমিকম্প,ভূমিধস, বন্যা, হিমবাহ গলনের পূর্বভাস দিয়ে আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া। তবে এখানেই শেষ নয়। চিন, পাকিস্তানের মধ্যে শত্রুপক্ষরা যখন কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপে জড়াবে, তখন এই উপগ্রহ সরাসরি তথ্য পাঠিয়ে দেবে। এমনকি প্রতিটি মুভমেন্টে প্রতিটি স্থানের ছবি ধরা পড়বে এই রাডারে।

বিজ্ঞানের জয়যাত্রায় ভারত

উল্লেখ্য, 1975 সালে NASA এবং ISRO প্রথমবার যৌথভাবে SITE-এর মাধ্যমে দেশের গ্রামগঞ্জে শিক্ষামূলক প্রচার অনুষ্ঠান চালু করেছিল। সেই ATS-6 স্যাটেলাইট তখন কোটি কোটি ভারতীয়কে শিক্ষার আলো দেখিয়েছিল। আর আজকের দিনে দাঁড়িয়ে সেই NASA-র যন্ত্রাংশই ভারতীয় রকেটের মাধ্যমে মহাকাশে উঠছে। 

এ বিষয়ে ISRO-র প্রাক্তন ডেপুটি ডিরেক্টর অরূপ দাসগুপ্ত বলেছেন, 50 বছর আগে আমরা NASA-এর স্যাটেলাইটে পড়াশোনা করতাম। আর আজ তাঁদের উপগ্রহ আমাদের রকেটে উঠছে। এটাই সব ভারতীয়দের জন্য গর্বের বিষয়।

আরও পড়ুনঃ UTS অ্যাপে রেকর্ড পূর্ব রেলের! শিয়ালদা ডিভিশনে বিক্রি ৪১.৫৯ লক্ষের বেশি টিকিট

প্রসঙ্গত, এই মিশনের সমস্ত তথ্য বিশ্বের ভূতত্ত্ববিদ, কৃষি গবেষক, আবহাওয়াবিদ এবং পরিবেশ বিজ্ঞানীদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হবে। NASA-এর বিজ্ঞানী পল রোসেন বলেছেন, একেবারে সিনেমার দৃশ্যের মতো NISAR পৃথিবীর প্রতিটি পাল্টে যাওয়া ভূখণ্ডের ছবি বলে দেবে। পাশাপাশি ভূমিধস, বন্যা, ভূমিকম্পের আগাম সতর্কবার্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিশ্লেষণও করবে এই NISAR উপগ্রহ।

Leave a Comment