৩০ দিন গারদে থাকলে পদ খোয়াবেন মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী! নয়া আইন আনছে কেন্দ্র

New Bill In Parliament

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: টানা ৩০ দিন গুরুতর অপরাধ মামলায় গ্রেফতার হলে জনপ্রতিনিধিদের সরাতে এবার নতুন বিল নিয়ে আসতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার! যার জেরে এবার এই নয়া বিলের মাধ্যমে পদ খোয়াতে পারেন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে অন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মন্ত্রীরাও! এদিকে এই বিল পেশ করার খবর প্রকাশ্যে আসতেই জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। জানা গিয়েছে আজ অর্থাৎ বুধবার এমনই বিল পেশ করতে চলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

বিলের কার্যকারিতার ব্যাপক প্রভাব রাজনীতিতে

PTI এর রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ অর্থাৎ বুধবার লোকসভায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিল আনতে চলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর এই তিনটি বিল হল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন (সংশোধনী) বিল ২০২৫, সংবিধান (১৩০ তম সংশোধনী) বিল ২০২৫ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস (সংশোধনী) বিল ২০২৫। সূত্রের খবর, ১৩০ তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমেই ২৩৯এ(এ) অনুচ্ছেদের মধ্যে ৫এ ধারা যুক্ত করা হবে৷ সেক্ষেত্রে এই সংশোধনী আইনে পরিণত হলে দেশের প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মন্ত্রীদের উপর সরাসরি কার্যকর হবে বলে জানা যাচ্ছে।

কী বলা হয়েছে নতুন বিলে?

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পেশ করা নতুন বিলে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কোনও মন্ত্রী যদি গ্রেফতার হন এবং একটানা ৩০ দিন জেল হেফাজতে থাকেন, তাহলে ৩১তম দিনে তাঁকে হয় পদত্যাগ করতে হবে, নয়ত পদ থেকে সরানো হবে। এমনকি এই নতুন বিল অনুযায়ী, কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের লেফটেন্যান্ট গভর্নরই নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে পদ থেকে সরাতেসরানোর সুযোগ পাবেন। তবে প্রধানমন্ত্রীকে সরাতে পারবেন রাষ্ট্রপতি। একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে এই নয়া বিল সংক্রান্ত।

উল্লেখ্য, বর্তমানে ভারতের সংবিধানে এমন কোনো বিধান নেই, যেখানে গ্রেফতারির ক্ষেত্রে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অপসারণের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হবে। তবে এবার সেই ব্যবস্থা আনতে চলেছে এই নয়া বিল। সরকারের মতে, এই বিল শাসনব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনবে এবং জনগণের আস্থা বজায় রাখার পাশাপাশি শাসনব্যবস্থা আরও দায়িত্বশীল হয়ে উঠবে। বিশেষ করে, দুর্নীতি, সন্ত্রাস বা অন্যান্য গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ যাতে শাসনব্যবস্থার ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে তার জন্য এই নয়াবিল পেশ করতে চলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তবে এক্ষেত্রে সংবিধানের সংশোধনের জন্য লোকসভা এবং রাজ্যসভা উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন রয়েছে। এবং সর্বশেষে রাষ্ট্রপতির সম্মতি পেলে এটি আইনে পরিণত হবে।

আরও পড়ুন: আসানসোলে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস! স্থানীয়দের বিক্ষোভে উত্তেজনা এলাকায়

বিরোধীদের কটাক্ষ

আজ এই তিনটি বিল লোকসভায় পেশ হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই কেন্দ্রের এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের প্রতি তীব্র বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস৷ কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন, “ক্ষমতাসীন দল বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের ভোটে হারাতে পারছে না বলে তাদের অপসারণের জন্য এমন একটি আইন আনতে চায়।” এছাড়াও তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে তিনি বলেন যে, “ সবটাই একটা ষড়যন্ত্র! গ্রেফতারের জন্য কোনও নির্দেশিকা অনুসরণ করা হয়নি, বিরোধী নেতাদের অপ্রাসঙ্গিকভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাই কেন্দ্র বিরোধী দলকে অস্থিতিশীল করার সর্বোত্তম উপায় হিসাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে।” তবে অনেকেই আবার এই বিলকে স্বাগত জানিয়েছেন।

Leave a Comment