৩১৫ কোটির সাইবার জালিয়াতি! পবন রুইয়া ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ

Pawan Ruia

সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: এবার সাইবার জালিয়াতি মামলায় নাম উঠল কলকাতার শিল্পপতি পবন রুইয়ার (Pawan Ruia)। হ্যাঁ, বাম আমলে যাদের হাতে ডানলপকে তুলে দেওয়া হয়েছিল, এবার তাদের বিরুদ্ধেই ৩১৫ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগ। রিপোর্ট অনুযায়ী খবর, সাইবার জালিয়াতির ওই টাকা বহু সংস্থার মাধ্যমে পবন রুইয়া এবং তার পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। বর্তমানে এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত নেমেছে পুলিশ, এমনকি এফআইআরও দায়ের করা হয়েছে।

৩১৫ কোটি টাকার সাইবার জালিয়াতি

সম্প্রতি দ্য টেলিগ্রাফের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, দেশের একাধিক প্রতারণা মামলার তদন্ত অনুযায়ী টাকাগুলি রুইয়ার পরিবারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে। আর সব মিলিয়ে তার পরিমাণ প্রায় ৩১৫ কোটি টাকা। ন্যাশনাল ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পবন রুইয়ার পরিবারের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলির অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধেই প্রায় ১৩৭৯টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০০টির বেশি অভিযোগ এসেছে বাংলা থেকে।

এদিকে তদন্তে উঠে এসেছে আরও ভয়াবহ তথ্য। জানা যাচ্ছে, এক প্রতারণা মামলার টাকা প্রথমে জমা হয়েছিল হুগলি মেশিনারিজ প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে ভুয়ো পরিচয়ের এক সংস্থার অ্যাকাউন্টে। আর সেখান থেকে দুই দফায় কোম্পানি আরও দুটি অ্যাকাউন্টে সেই টাকা স্থানান্তর করে। এমনকি পরে দেখা যায়, ওই সংস্থার প্যান নম্বরের সঙ্গে যুক্ত অ্যাকাউন্টগুলোর বিরুদ্ধে প্রায়ই ৫৪৪টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে মোট টাকার অংক দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৯৭ কোটি।

এদিকে তদন্তকারীরা মোট ১৬টি বেনিফিসারি ফার্মের সন্ধান পেয়েছিল। এর মধ্যে অন্যতম হল গেইন ই-কমার্স, দহিসার ট্রেডার্স, সেটল টেকনোলজিস্ট, মেলরোজ ক্রিয়েশন ইত্যাদি। এদিকে তদন্ত করে জানা যায় যে, এই ১১ জন ডিরেক্টর সারাদেশে মোট ১৮৬টি কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ১৪৭টি কোম্পানি কলকাতা রেজিস্ট্রার করা। এমনকি ৭৩টি কোম্পানির রেজিস্ট্রার অফিসের ঠিকানা ৯, এজরা স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১। তবে তদন্ত করে জানা যায়, ওই ঠিকানায় আদৌ কলকাতায় কোনও অফিসের অস্তিত্ব নেই।

আগেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন পবন রুইয়া

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে জেসপ ফ্যাক্টরি থেকে রেলওয়ে সরঞ্জাম চুরির মামলায় পবন রুইয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। আর তখন তার মালিকানাধীন জেসপ ও ডানলপ কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সেগুলি অধিগ্রহণের চেষ্টা চালিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু নতুন মামলায় তার তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনওরকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আর এ নিয়ে রাজ্যের শিল্প মহলে শুরু হয়েছে জোর শোরগোল।

আরও পড়ুনঃ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ব্যবহার করা যাবে না ক্যালকুলেটর! নিষেধাজ্ঞা জারি সংসদের

বলাবাহুল্য, ইতিমধ্যেই তদন্তে পবন রুইয়া সহ তার পরিবারের মোট পাঁচজনের অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে পুলিশ। বাকিরা হলেন রাঘব রুইয়া, সরিতা রুইয়া, পল্লবী রুইয়া এবং সাক্ষী রুইয়া। তাদের অ্যাকাউন্টে অন্তত ২৩টি সাইবার জালিয়াতি মামলার টাকা সরাসরি জমা পড়েছে বলেই খবর। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে দেখা হচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলোর মাধ্যমে প্রতারণার টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। এমনকি অর্থ কোথায় গিয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হবে।

Leave a Comment