৩৫০ স্কুলে নেই একটাও পড়ুয়া! রিপোর্ট দেখে চিন্তায় রাজ্য সরকার

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: বর্তমানে সরকার পোষিত এবং সরকার অনুমোদিত স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো থাকার পাশাপাশি পর্যাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাও রয়েছে, কিন্তু এত সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও পড়ুয়ার সংখ্যা দিন দিন যেন কমেই চলেছে। অথচ একটা সময় হাজারখানেক পড়ুয়ার কলরবে মুখর হয়ে থাকত স্কুল। আর এর নেপথ্যে উঠে আসছে রাজ্যের বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলি।

স্কুলে কমছে পড়ুয়ার সংখ্যা

যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে আজকাল অনেক পড়ুয়ার বাবা মা শিক্ষার ক্ষেত্রে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলিকে বেছে নিচ্ছে। যার ফলে রাজ্য সরকার পোষিত এবং সরকার অনুমোদিত স্কুলগুলিতে কমছে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা। সম্প্রতি, স্কুল শিক্ষা দফতরের সমীক্ষায় উঠে এল এক ভয়াবহ রিপোর্ট।

আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের ২৩ জেলার প্রায় ৩৫০ স্কুলে নেই একটিও পড়ুয়া। অর্থাৎ ছাত্রছাত্রী সংখ্যা শূন্য। এছাড়াও রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতায় ১১৯টি স্কুলে কোন‌ও ছাত্র নেই। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা ৬০টি স্কুল।

নেপথ্যে কারণ কী?

এ ছাড়াও হাওড়ায় ২৪, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ১৭, পূর্ব বর্ধমানে ১৮, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১১, নদীয়ায় ১৩টি স্কুলে নেই একটি ছাত্রছাত্রীও। সব মিলিয়ে ২৩ জেলায় ৩৪৮ স্কুলে পড়ুয়া নেই। এমনকি বিল্ডিংগুলো প্রায় ভগ্নপ্রায় দশা। যার জেরে মাথায় চিন্তার হাত পড়েছে প্রশাসনের। এদিকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলি ছাত্রশূন্য হয়ে পড়ায় প্রশ্ন উঠছে শিক্ষক মহলে।

এই প্রসঙ্গে নারায়ণ দাস বাঙ্গুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, যে স্কুলগুলি ইতিমধ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে না সেগুলি শিক্ষার সংস্কৃতির কাজে ব্যবহার করা উচিত। অন্যদিকে যে সমস্ত স্কুল ইংরেজি মাধ্যম খুলতে চায়, বিল্ডিংয়ের অভাবে খুলতে পারছে না, তাদের পাশে সরকারের দাঁড়ানো উচিত।

আরও পড়ুন: বৃদ্ধ হচ্ছে হাওড়া ব্রিজ, বিপদে রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন সেতু? প্রকাশ্যে ভয়ঙ্কর রিপোর্ট

অন্যদিকে দিনের পর দিন স্কুলগুলি ছাত্রশূন্য হয়ে পড়ায় সরকার কি কোনও বিকল্প ভাবনা নিতে চলেছে এই প্রশ্ন তুলেছে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল। তিনি বলেন, “সরকার এখন ৩৪৮টি স্কুল তুলে দিয়ে সেই স্কুলগুলোর বিল্ডিং ও সম্পত্তির কাজে ব্যবহার করতে চাইছে। কিন্তু, আমরা কোন‌ও স্কুল তুলে দেওয়ার পক্ষে নই। তাই অবিলম্বে সরকারের উচিত বিকল্প ব্যবস্থা করা।’’ তবে এই ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি রাজ্য সরকার।

Leave a Comment