সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সম্প্রতি ভারত দারিদ্র্য হ্রাসের লড়াইয়ে সাফল্যের মুকুট অর্জন করেছে। তবে অন্যদিকে বিশ্বব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক রিপোর্ট (World Bank Report) নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। হ্যাঁ, দেশের প্রতি চারজন নাগরিকের মধ্যে একজন এখনো সুবিধাজনক জীবনযাত্রার ন্যূনতম মানটুকু পায়নি!
সম্প্রতি বিশ্বব্যাঙ্কের এক রিপোর্ট বলছে, ভারতের প্রায় 35 কোটি মানুষ এখনো পর্যন্ত এরকম অবস্থায় রয়েছে, যারা ন্যূনতম পুষ্টিকর খাবার, নিরাপদ বাসস্থান, স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা ব্যবস্থার মতো সুবিধগুলি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
দারিদ্র্যতা কমলেও উপযুক্ত জীবনযাপনের এখনো অভাব দেশে
2011 সালে প্রায় 27% ভারতীয় দিনে 3 ডলার আয় করতেন বলেই এক রিপোর্ট জানাচ্ছে। আর সেখানে 2025 সালে সেই হার কমে মাত্র 5%-এ ঠেকেছে। অর্থাৎ, এই সময়ের মধ্যে প্রায় 26.9 কোটি মানুষই চরম দারিদ্র সীমা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।
তবে বিশ্বব্যাঙ্ক বলছে, 3 ডলার প্রতিদিনের মাপকাঠি এখন আর ভারতের মতো দেশগুলোর জন্য যথেষ্ট নয়। হ্যাঁ, ভারতের সাম্প্রতিক উন্নয়ন অনুযায়ী প্রতিদিন 4.2 ডলার আয় করা প্রয়োজন। ফলে নিম্ন-মধ্য আয়ের দারিদ্র সীমাকে এবার নতুন মানদন্ড দিতে হবে। আর সেই মানদণ্ড অনুযায়ী এখনো প্রায় 35 কোটি মানুষই এই তালিকা থেকে পিছিয়ে রয়েছে।
পরিসংখ্যান দেখলে শিউরে উঠবেন
রিপোর্ট বলছে, ভারতের চরম দারিদ্র্যের হার বর্তমানে মাত্র 5%। অর্থাৎ, প্রায় 7 কোটির বেশি মানুষ এই সীমার মধ্যে বসবাস করছে, যাদের বর্তমানে প্রতিদিন আয় 3 ডলারের থেকে কম। এদিকে নিন্ম-মধ্য আয়ের সীমা থেকেও নীচু স্তরে বসবাস করছে প্রায় 25% মানুষ, অর্থাৎ 35 কোটির বেশি জনগণ, যাদের প্রতিদিনের আয় 4.20 ডলারের থেকে কম।
তবে আরেক রিপোর্ট বলছে, দেশের দারিদ্র্যতা 2013 সালের 29% থেকে কমে 2022 সালে 11.3%-এ নেমে এসেছে। তবে জিনি সূচক দাবি করছে, 2011 সালের 28.8% থেকে 2022 সালে 25.5%-এ সামান্য উন্নতি হয়েছে। এদিকে শীর্ষ 1% ভারতীয়র হাতে জাতীয় সম্পদের 40% রয়েছে, যেখানে নিম্ন 50% মানুষই নিয়ন্ত্রণ করে মাত্র 6.4%।
আরও পড়ুনঃ অনেকটাই দরপতন হলুদ ধাতুর, মধ্যবিত্তদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে রুপো! আজকের সোনার দাম
শহর থেকে গ্রাম, সব জায়গাতেই সংকট
অনেকেই হয়তো মনে করবেন যে, শহরের মানুষজন স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করে। তবে না, রিপোর্ট অন্য কিছু বলছে। শহরের মানুষরা উচ্চ বাড়ি ভাড়া, অনিশ্চিত চাকরি, ব্যয়বহুল স্বাস্থ্য পরিষেবার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। আর যেকোনো একটি জরুরী পরিস্থিতিই পরিবারগুলিকে দারিদ্র্যের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আর গ্রামের পরিস্থিতি আরও জটিল। সেখানে আর কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না।