সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: আমজনতার পকেটে লাথি দিয়ে অনেকটাই বাড়ল রান্নার এলপিজি গ্যাসের দাম (LPG Price Hike)। টানা তিন মাস দাম কমার পর তরলকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের দাম অনেকটাই চড়ল। হ্যাঁ, চলতি ডিসেম্বর মাসে সিলিন্ডার প্রতি ফের ৩৮ টাকা বাড়িয়ে এবার ১২৫৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এই দাম মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকেই কার্যকর হয়েছে।
অনেকটাই বাড়ল এলপিজি গ্যাসের দাম
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এবার থেকে ১২ কেজি গার্হস্থ্য এলপিজি সিলিন্ডার পাওয়া যাবে ১২৫৩ টাকায়। সিলিন্ডার প্রতি আগে দাম ছিল ১২১৫ টাকা। ফলে দাম বাড়ল ৩৮ টাকা। অন্যদিকে যানবাহনে ব্যবহৃত অটো গ্যাসের দাম প্রতি লিটার ৫৫.৫৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে এবার ৫৭.৩২ টাকা করা হয়েছে। ফলে গাড়ির মালিকদের উপর পড়েছে বাড়তি চাপ। যদিও উল্লেখযোগ্য ভাবে এর আগে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর এবং নভেম্বর টানা তিন মাস দাম অনেকটাই কমানো হয়েছিল।
রিপোর্ট বলছে, গত নভেম্বর মাসে এলপিজি সিলিন্ডারের ২৬ টাকা দাম কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২১৫ টাকা। আর অক্টোবরে দাম ছিল ১২৪১ টাকা এবং সেপ্টেম্বরে দাম ছিল ১২৭০ টাকা। তবে ফের আবার ঊর্ধ্বগতিতে ঠেকল এলপিজি সিলিন্ডারের দাম। এতে মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত পরিবারের উপরে যে বাড়তি প্রভাব পড়বে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
কী কারণে ঊর্ধ্বগতি সিলিন্ডারের দাম?
আসলে শীতকালে পশ্চিমা দেশগুলির হিটিংয়ের জন্য এলপিজি-র চাহিদা অনেক গুণ বেড়ে যায়। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম ছ্যাঁকা দেয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি এবং ডলারের বিনিময়ের হার পরিবর্তনের কারণেই দেশের বাজারে এলপিজি গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। যদিও গ্রাহকদের অভিযোগ, নির্ধারিত দামে কখনোই বাজারে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া যায় না। খুচরো বাজারে ১২০০ টাকা সিলিন্ডার, যা ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। দাম হওয়া উচিত ১০০০ টাকা। কিন্তু দায়িত্বহীনভাবে সেই সিলিন্ডার চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের থেকেই অতিরিক্ত মুনাফা তোলার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: অক্ষত থাকবে পাইলট! হাই-স্পিড রকেট স্লেড ইজেকশন সিস্টেমের সফল টেস্ট করল DRDO
এদিকে ব্যবসায়ীরা দাবি করছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় বাংলাদেশের পরিবহন খরচ অনেকটাই বেশি। সে কারণেই গ্যাসের দামের উপর প্রভাব পড়ে। কারণ, বাংলাদেশে ছোট জাহাজে গ্যাস আমদানি করতে হয়। কিন্তু উপদেষ্টা মহল দাম কমানোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করছে এবং ব্যবসায়ীদের সততার সঙ্গে ব্যবসা করার আহ্বান জানিয়েছে। যদিও সামগ্রিকভাবে এতে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের উপর অনেকটাই প্রভাব পড়বে।