সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) সাহারানপুরে ঘটেছে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। যেখানে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন পুলিশ কর্মীরা, সেই পুলিশ ইন্সপেক্টরের স্ত্রীই 66 লক্ষ টাকার প্রতারণা শিকার হয়েছেন। ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
কীভাবে ঘটল এই ঘটনা?
জানা গিয়েছে, ভুক্তভোগীর নাম ববিতা, যিনি সাহারানপুরের ডিআইজি অফিস সংলগ্ন আরআই কম্পাউন্ডে থাকতেন। তিনি অভিযোগ করছেন, কিছু প্রতারক নিজেদের শেয়ার মার্কেট কোম্পানির প্রতিনিধির পরিচয় দিয়ে তাঁকে টোপ দিয়েছিল। প্রথমে মাত্র 46,500 টাকা দিয়ে তাঁর নামে একটি আইডি তৈরি করা হয়। এরপর একটি হোয়াটাঅ্যাপ গ্রুপে ঢুকিয়ে ভুয়ো লাভের রিপোর্ট দেখানো হয়।
প্রসঙ্গত, প্রথমে ববিতার স্বামী ইন্সপেক্টর দীনেশকে বিনিয়োগ করানোর চেষ্টা করা হলেও তিনি অস্বীকার করেন। এরপর টার্গেট করা হয় তাঁর স্ত্রীকে। প্রতারকরা দাবি করেছিল, যদি নির্দিষ্ট কোম্পানিতে টাকা বিনিয়োগ করা হয় তাহলে 22 মাসের মধ্যেই সেই টাকা দ্বিগুণ হয়ে যাবে!
इंस्पैक्टर की अमीर बीबी!#सहारनपुर के UP पुलिस इंस्पैक्टर दिनेश की पत्नी बबीता ने एक कंपनी में ₹66 लाख इन्वेस्ट किये. फिर पता चला कि फ्राड हो गया है. UPSTF-सहारनपुर पुलिस ने 2 आरोपियों को अरेस्ट करके केस खोल दिया
अब पुलिस जांच कर रही है कि बबीता के पास ₹66 लाख कहां से आये? pic.twitter.com/rJhM40wuQD
— Narendra Pratap (@hindipatrakar) September 8, 2025
নকল অফিস, ভুয়ো সফটওয়্যার দিয়েই প্রতারণা
বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে প্রতারকরা ববিতাকে মিরাটের একটি ভুয়ো অফিসে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর সঙ্গে শক্তি সিং উপাধ্যায় নামের এক ব্যক্তির পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়, যাকে কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলা হয়। তিনিও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে বিনিয়োগের টাকা 22 মাসে দ্বিগুণ হবে। শুধু তাই নয়, ট্রেডিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে তাঁকে নকল লেনদেন দেখানো হয়।
এমনকি সবথেকে বড় ব্যাপার, পরবর্তী সময়ে তাঁকে মিরাটে 100 গজের একটি প্লটের নামেও লোভ দেখানো হয়। বলা হয়, টাকার নিরাপত্তা চাইলে সেই প্লট তাঁর নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া যাবে। কিন্তু রশিদের জন্য টাকা দিতে হবে। আর এইভাবে ধাপে ধাপে মোট 66 লক্ষ টাকা ওই প্রতারকরা হাতিয়ে নেয়।
আরও পড়ুনঃ ঘণ্টায় আয় হবে ৪৫০০ টাকা, সেরা সুযোগ নিয়ে এল Meta! কীভাবে করবেন জানুন ঝটপট
তবে ববিতা যখন সন্দেহ করে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে কোম্পানির রেকর্ড খুঁজতে যায়, তখনই আসে আসল ছবি। দেখা যায় যে, কোম্পানির কোনো অস্তিত্বই নেই। তখনই তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন। অবশেষে সাহারানপুর কোটওয়ালি সদর বাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। উল্লেখ্য, পুলিশ ইতিমধ্যেই দশজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। তালিকায় রয়েছে শক্তি সিং, রাজকুমার, সাভিতা, অনিল, মনজিত গৌর, অনিল মোটা, বিকি, ওম সিং, রাক্ষী ও আয়েশা প্রমুখরা। দুজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
তবে এখন শুধু প্রতারকরাই নয়, তদন্তের আওতায় পড়েছেন ঐ পুলিশ ইনস্পেক্টর স্ত্রীও! কারণ এক সাধারণ পুলিশকর্মীর স্ত্রীর কাছে ৬৬ লক্ষ টাকা এল কি করে! সেটাও খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা।