সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ সামাজিক মাধ্যমে আবারও একবার ভাইরাল হল এক হৃদয়বিদারক ছবি, যা দেখলে আপনারও চোখে জল আনবে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কখনও বৃদ্ধা স্ত্রীর মৃতদেহ আগলে বসে রয়েছেন অসহায় স্বামী, তো আবার মৃত স্ত্রীর দেহ কাঁধে চাপিয়ে স্টেশনে ঘুরে বেরাচ্ছেন। আর এমনই চাঞ্চল্যকর ছবি ধরা দিল বরাভূম (Barabhum) রেল স্টেশনে। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। আরও বিশদে জানতে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটির ওপর।
রেল স্টেশনে স্ত্রীর দেহ আগলে স্বামী!
জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া শহরের গোসালা বস্তির বাসিন্দা মনোজ কর্মকার এবং তার স্ত্রী শান্তা কর্মকার রেল স্টেশনে এবং ট্রেনে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বোতল কুড়োনোর কাজ করতেন। এরপর সোমবার বৃদ্ধ স্বামী স্ত্রী কান্দ্রা স্টেশন থেকে ট্রেনে করে ফেরার পথে বরাভূম স্টেশনে শান্তা কর্মকার আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা সেখানে নেমে যান। এরপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলে স্টেশনেই মৃত্যু হয় শান্তা কর্মকারের। তারপরের ঘটনা আরও অবাক করার মতো। ইতিমধ্যে এই ঘটনার ছবি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক গতিতে ভাইরাল হয়েছে।
এরপর বরাভূম স্টেশনে স্ত্রীর মৃতদেহ নিয়ে প্রায় ছয় ঘন্টা অপেক্ষা করেন মনোজ কর্মকার। ঘটনায় রেল কর্তৃপক্ষ কোনো সহযোগিতা করেনি বলে অভিযোগ। এহেন দৃশ্য দেখে বলরামপুরের বাসিন্দা এক রেল যাত্রী বলেন, রেলের স্টাফরা ওই বৃদ্ধকে মৃত দেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে মৃত স্ত্রীকে কাঁধে চাপিয়ে এক প্লাটফর্ম থেকে আরেক প্লাটফর্মে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় তার স্বামীকে । পরে স্টেশনের বাইরে দেহ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করলে তারাই খবর দেন বলরামপুর থানায়।
আরও পড়ুনঃ বকেয়া সাড়ে তিন লক্ষ! বনগাঁর বিজেপি বিধায়কের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করল দপ্তর
দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে
দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রে খবর, জিআরপি পুলিশের সহযোগিতায় অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পুরুলিয়া গভর্মেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। কেন মহিলার স্বামীকে স্ত্রীর দেহ তুলতে হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। ঘটনায় রেল কর্তৃপক্ষের দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে। সকলের দাবি, প্রায় ছয় ঘণ্টা দেহটি পড়েছিল স্টেশনেই। অপরদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে বরাভূম স্টেশনের আধিকারিকরা স্পিকটি নট মোডে রয়েছেন। এপ্রসঙ্গে আদ্রা ডিভিশনের এক আধিকারিক জানান, প্ল্যাটফর্মে মৃত দেহ রয়েছে এই খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিকিউরিটি কন্ট্রোলে খবর দেওয়া হয়। এর মাধ্যমেই খবর যায় পুরুলিয়া জিআরপিতে। মৃতদেহ সরানোর কাজ জিআরপির। যাইহোক, ঘটনাকে কেন্দ্র করে চারিদিকে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।