সৌভিক মুখার্জী, কলকাতা: দীঘায় জগন্নাথ মন্দিরের (Digha Jagannath Dham) উদ্বোধন এখনও এক বছর পেরোয়নি। তবে তার মধ্যে বিরাট নজির গড়ল। মাত্র ৮ মাসের মধ্যেই এই মন্দির দর্শনার্থীর সংখ্যা ছুঁয়ে ফেলল এক কোটি। হ্যাঁ, ডিসেম্বর মাস শেষ হওয়ার আগেই ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেছে এই মন্দির। ফলে বাংলার পর্যটন এবং ধর্মীয় মানচিত্রে যে দিঘা আরও একধাপ এগিয়ে গেল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিরাট রেকর্ড দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের
আজ অর্থাৎ ২৮ ডিসেম্বর বিকালে জগন্নাথ দেবের কোটিতম দর্শনার্থী হিসাবে চিহ্নিত করা হয় এক খুদে বালিকাকে। তাঁর নাম কাকলি জানা। কলকাতার টালিগঞ্জের বাসিন্দা কাকলি বাবা-মা এবং দাদার সঙ্গে জগন্নাথ দর্শনে দিঘায় এসেছিল। তবে আচমকা মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে সংবর্ধনা জানানো হয়। এমনকি কাকলির হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রভু জগন্নাথ দেবের মহাপ্রসাদ, ফুলের মালা এবং একটি স্মারক। এ বিষয়ে তাঁর বাবা সুরজিৎ জানা বলেছেন, আমরা সাধারণ ভক্ত হিসেবেই দর্শন করতে এসেছিলাম। তবে প্রভুর আশীর্বাদ যে এরকম ভাবে জুটবে তা ভাবতেই পারিনি। এটা আমাদের জীবনের সবথেকে স্মরণীয় মুহূর্ত।
আরও পড়ুন: শিয়ালদা, হাওড়ার ১০০টি ট্রেনের সময় বদল করল পূর্ব রেল, দেখুন নতুন সময়সূচি
বলাবাহুল্য, চলতি বছর অক্ষয় তৃতীয়ার দিন অর্থাৎ ২০২৫ সালের ৩০ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে দিঘার জগন্নাথ ধামের উদ্বোধন হয়। তারপর থেকেই ভক্ত এবং পর্যটকদের ভিড় এখানে চোখে পড়ার মতো বাড়তে থাকে। আর আট মাসের মধ্যে এক কোটির মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলল দিঘা, যা শুধুমাত্র সমুদ্র সৈকত নয়, বরং এই মন্দিরকে তীর্থ এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসাবেই বিশ্বমঞ্চে আত্মপ্রকাশ করাচ্ছে। এ বিষয়ে মন্দিরের প্রধান পুরোহিত এবং ট্রাস্টি রাধারমন দাস বলেছেন, এই ভিড় শুধুমাত্র সংখ্যার হিসাব নয়, বরং প্রভু জগন্নাথ দেবের আকর্ষণেরই প্রতিফলন। জাতি, ধর্ম, ভাষার নির্বিশেষেই মানুষ এখানে শান্তি খুঁজতে আসেন।
আরও পড়ুন: লন্ডনে গর্জে উঠল বাঙালি হিন্দুরা, বাংলাদেশের হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ
১৫০ দেশ থেকে আসছেন ভক্তরা
রাধারমন দাস স্পষ্ট জানিয়েছেন, দিঘার জগন্নাথ ধাম এখন শুধুমাত্র রাজ্য বা দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বিশ্বের মোট ১৫০টি দেশ থেকে ভক্তরা এখানে আসছেন। আমেরিকা, ইউরোপ থেকে শুরু করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ভক্তরা দিঘার উপকূলে এই আন্তর্জাতিক বৈষ্ণব সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্রে ভিড় জমাচ্ছেন। আর পর্যটনের ভরা মরসুমে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসায়ী, হোটেল মালিক, পরিবহন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলেই খুশিতে আত্মহারা। এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক বলেছেন, উদ্বোধনের পর থেকে জগন্নাথ ধামকে কেন্দ্র করে মানুষের আগ্রহ একেবারে চোখে পড়ার মতো। ভিড় সামাল দিতে জেলা প্রশাসনের সমস্ত দফতরের সঙ্গে সমন্বয়ে রেখেই কাজ চলছে।