দীর্ঘ ৩৫ বছর পর কাশ্মীরে ধুমধাম করে পালিত হল গণেশ চতুর্থী

Ganesh Chaturthi In Kashmir after 35 years-bkm

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: চলতি বছর তিথি অনুযায়ী গনেশ চতুর্থী পড়েছিল গত 26 আগস্ট, মঙ্গলবার। তবে ভাদ্র মাসের শুক্ল পক্ষ তিথির এই উৎসব 27 তারিখেও পালিত হয়েছে দেশের নানা প্রান্তে। আর সে সবের মাঝেই এবার শিরোনামে উঠে এসেছে কাশ্মীরের গণেশ চতুর্থী উৎসব। দীর্ঘ 35 বছর পর কাশ্মীরের পণ্ডিতরা একটি বিরাট রথযাত্রার মাধ্যমে গণেশ চতুর্থী উদযাপন করেন (Ganesh Chaturthi In Kashmir)। আর সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতেই হাজির হয়েছিলেন শয়ে শয়ে মানুষ।

দীর্ঘ বাধা কাটিয়ে অবশেষে গণেশ চতুর্থী উৎসবের সাক্ষী থাকল কাশ্মীর

1989 থেকে 1990 সাল পর্যন্ত কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের দাপাদাপির কারণে হিন্দু পণ্ডিতদের কাশ্মীর থেকে ব্যাপকভাবে অভিবাসন শুরু হয়। যার জেরে ধাক্কা খায় ধর্মীয় সংস্কৃতি। রিপোর্ট অনুযায়ী, সে বছর সন্ত্রাসবাদের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় কাশ্মীরজুড়ে বন্ধ হয়ে যায় গণেশ চতুর্থী উৎসব। বলা বাহুল্য, সিদ্ধিদাতা গণেশের এই উৎসব কাশ্মীরে স্থানীয়ভাবে বিনায়ক টোরাম নামে পরিচিত। বিগত বেশ কয়েক দশক ধরে নিরাপত্তা জনিত উদ্বেগের কারণেই এই উৎসব থমকে ছিল। তবে 2025 সালে ভারত সরকারের সহযোগিতায় ফের কাশ্মীর অঞ্চলে ধুমধাম করে পালিত হল গণেশ চতুর্থী উৎসব।

পুজোর দিনই গণেশের মূর্তি স্থাপন করলেন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা

রিপোর্ট অনুযায়ী, গত 27 আগস্ট গণেশ চতুর্থী উপলক্ষ্যে কাশ্মীরের ইন্দিরা নগর শিব মন্দিরে ফুল, চন্দন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য দিয়ে সিদ্ধিদাতা গণেশকে সাজিয়ে মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে গণেশের মূর্তি স্থাপন করেছিলেন কাশ্মীরের পণ্ডিতরা। এদিন বৈদিক মন্ত্র এবং ভজন জপের মধ্যে দিয়ে ধুমধাম করে পালন করা হয় গণেশ চতুর্থীর উৎসব। শুধু তাই নয়, তিথি এবং নিয়ম মেনে পুজোর পর ইন্দ্র নগরের মন্দির থেকে গণেশের মূর্তি বিসর্জনের জন্য পায়ে হেঁটে ঝিলাম নদীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

অবশ্যই পড়ুন: হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদল, একাধিক পণ্যের উপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করলেন ট্রাম্প! রইল তালিকা

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

এক সময়ে সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘড় হিসেবে পরিচিত কাশ্মীরে আজ স্বাধীনভাবে ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে, গণেশ চতুর্থী উৎসব। সে প্রসঙ্গেই স্থানীয় কমল চাঁদ পুরি জানিয়েছেন, কাশ্মীরে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখানকার পরিস্থিতি যে দিন দিন ঠিক হচ্ছে তার প্রমাণ এই গণেশ চতুর্থী উৎসব। আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, কাশ্মীর এবং দেশের বাকি অংশের সবাই যেন নিরাপদে থাকে।

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, আমরা সাত দিন ধরে এখানে পুজো করি। ধর্মীয় উৎসবের সময় হিন্দু মুসলিম সকলে একসাথে মিলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নানান অনুষ্ঠানে শামিল হই। দীর্ঘ 35 বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো গণেশ চতুর্থী উপলক্ষ্যে ইন্দ্র নগরের মন্দির থেকে শুরু হয়েছিল ঐতিহাসিক রথযাত্রা। সে প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এক স্থানীয় বলেন, আমরা নির্দ্বিধায় গণপতি বাপ্পার নাম নিয়ে ওই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছিলাম। এটা আমাদের কাছে একটা বিরাট উৎসব। আরও এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, গণেশ চতুর্থী নিয়ে কাশ্মীরের মানুষদের আগে যে উৎসাহ ছিল সেই একই উৎসাহ ধরা দিয়েছে এবার। আমি সমস্ত মুসলিম ভাইদের অনুরোধ করছি যে, তারাও এগিয়ে আসুন। কাশ্মীরের সমস্ত উৎসবের শামিল হন। স্থানীয় হিন্দুদের বেশিরভাগের দাবি, কাশ্মীর মুসলমান ছাড়া সম্পূর্ণ নয়। আমরা সকলে ভাই ভাই।

Leave a Comment