বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: ‘ভারতের উপর চড়া শুল্ক চাপিয়ে একেবারে ঠিক কাজ করেছে আমেরিকা!’ কার্যত এমন মন্তব্যই করেছেন গত 28 ফেব্রুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দরবার থেকে এক প্রকার ঘাড় ধাক্কা খাওয়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেন্সকি। নাম না করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে নয়া দিল্লির উপর ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে যথাযথ বলেছেন ইউক্রেনের শাসক (Zelenskyy Supports Trump Tariff)।
ঠিক কী বলেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট?
রবিবার, আমেরিকান সংবাদমাধ্যম ABC নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকি বলেন, আমি মনে করি, যে সমস্ত দেশ রাশিয়ার সাথে সমঝোতা করে চলছে, সেখান থেকে তেল কিনে তাদের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে, সেই সব দেশের উপর শুল্ক আরোপ করা একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত।
এদিন একেবারে নাম না করে, ভারতের উপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের 50 শতাংশ শুল্কের গাজোয়ারিকে সরাসরি সমর্থন করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। আর তারপরই, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ভারতের সাথে সরু লাইন করে এখন আমেরিকার সামনে নিজের ভাবমূর্তি ঠিক রাখার চেষ্টা করছেন জেলেন্সকি? ট্রাম্পকে খুশি করতেই কি এমন মন্তব্য? নয়া দিল্লির উপর ট্রাম্পের শুল্ক সংক্রান্ত অন্যায়কে এক কথায় সমর্থন জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট, এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলে একাংশ।
অবশ্যই পড়ুন: রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বাড়ছে আহত-নিহতের সংখ্যা, নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলল ভারত
প্রসঙ্গত, আমেরিকা তথা পশ্চিমী দুনিয়ার তরফে নরমে গরমে বারবার বোঝানো সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে অধিক ছাড়ে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে ভারত। আর সেটাই একেবারে সহ্য হয়নি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়াকে আর্থিক মদত যোগানোর অভিযোগ এনে ভারতকে কাঠগড়ায় তোলার পাশাপাশি নয়া দিল্লির উপর দুই ধাপে একেবারে অনৈতিকভাবে 50 শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের দেশের আদালতে বারবার ধাক্কা খাওয়া সত্ত্বেও পুরনো চিন্তাতেই অবিচল মার্কিন শাসক।
নয়া দিল্লির বিরুদ্ধে আমেরিকার এমন সিদ্ধান্ত বা নির্দেশকে একেবারে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছে হোয়াইট হাউস। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে গোটা পদক্ষেপকে সরাসরি অযৌক্তিক এবং অন্যায্য বলে দাবি করেছে কেন্দ্র। শুধু তাই নয়, জাতীয় স্বার্থ রক্ষার্থে সব রকম পদক্ষেপ নেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নয়া দিল্লি। এমতাবস্থায়, জেলেন্সকি ভারতের প্রতি ট্রাম্পের এমন অবিচারকে সরাসরি সমর্থন করায়, কিয়েভের সাথে নয়া দিল্লির সম্পর্কে যে কিছুটা হলে খারাপ হবে তেমন সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছে না কূটনৈতিক মহল।