মদ্যপ ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত ছাত্রী? ‘বিশেষ বন্ধু’র পোস্ট ঘিরে বাড়ছে রহস্য

Jadavpur University

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: ছাত্রী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফের চর্চায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University)। বৃহস্পতিবার রাতে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চার নম্বর গেটের কাছের ঝিলপাড় থেকে অচৈতন্য অবস্থায় অনামিকা মণ্ডল নামে এক ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। মৃত্যুর আসল কারণ যাচাই করতে ইতিমধ্যেই দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। এমতাবস্থায় অনামিকার বিশেষ বন্ধুর তরফে মিলল এক ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট।

প্রশ্ন উঠছে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেট দিয়ে ঢোকার মুখেই ইউনিয়ন রুম সংলগ্ন এলাকায় যে ঝিল রয়েছে। সেখানেই পড়ে গিয়েছিল তৃতীয় বর্ষের ইংরাজি বিভাগের ছাত্রী অনামিকা মণ্ডল। অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে দেন। এদিকে একই দিনে চার নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় একটি ছাত্র সংগঠনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল। ফলে সন্ধ্যার পর ভালই ভিড় ছিল ওই এলাকায়। তার মাঝেই এই ভয়ংকর দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠছে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে। আদতে এটি খুব কিনা সেটা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তাই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে দেহটি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা বিশেষ বন্ধুর

এদিকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অনামিকা মণ্ডলের এই আকস্মিক মৃত্যুতে ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। এমতাবস্থায় সংবাদ প্রতিদিনের রিপোর্ট অনুযায়ী আজ অর্থাৎ শুক্রবার ভোর ৫ টা নাগাদ সোশাল মিডিয়ায় অনামিকার সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করেন তাঁর ‘বিশেষ বন্ধু’ অত্রি ভট্টাচার্য। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমার ভালবাসায় নিশ্চয়ই কোনও খামতি ছিল। আমার পূর্বজন্মের নিশ্চয়ই ছিল কোনও পাপ। তাই শুধু আমাকে না, সকলকে ছেড়ে চলে গেলি। আর কোনও কথা নেই। রাগ নেই। হেসেও উঠবি না আর। আমাকে এই নরক থেকে নিয়ে যেতে পারতিস মিষ্টু।’ অনামিকা কেনই বা গতকাল ঝিলপাড়ে গিয়েছিল সেই নিয়ে অত্রিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান সেই উত্তরও তার কাছে অজানা।

আরও পড়ুন: নেপালে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের বাসে ওপর হামলা! চলল দেদার লুটপাট, আহত ৭-৮

প্রসঙ্গত, পুলিশি তদন্তের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতের দিকে ঝিলপাড়ে বসেছিলেন ৫ বন্ধু। তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন অনামিকা মণ্ডল। সকলে মিলে নাকি মদ্যপান করছিলেন। তখনই মদ্যপ অবস্থায় জলে নামার ইচ্ছে প্রকাশ করেন তিনি। বন্ধুদের দাবি তাঁকে অনেকবার বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু আচমকাই নাকি ঝিলে নামেন অনামিকা। মদ্যপ অবস্থায় বন্ধুরা বোঝেন যে তিনি তলিয়ে যাচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে বাকিরা তাঁকে বাঁচানোর জন্য জলে নামেন, তুলেও আনেন বন্ধুকে। কিন্তু ততক্ষণে অচৈতন্য হয়ে পড়েছেন অনামিকা। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। যদিও এর সত্যতা এখনো যাচাই করেনি পুলিশ।

Leave a Comment