সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ সামনেই রয়েছে দুর্গাপুজো। আর আসন্ন এই উৎসবকে ঘিরে অনেকের অনেক প্ল্যান রয়েছে। কেউ নিজের শহরে থেকে প্যান্ডেল হপিং তো কেউ পুজোর কয়েকটা দিন একটু বাইরে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করেছেন বা করছেন। আপনারও কি কোথাও ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান রয়েছে? লিস্টে ডুয়ার্স আছে? তাহলে আপনার জন্য রইল দারুণ সুখবর। পুজোর মুখে খুলে গেল ডুয়ার্স (Dooars)-এর দরজা।
পুজোর আবহে খুলল ডুয়ার্স
দুর্গাপুজোর আগে উত্তরবঙ্গের পর্যটন খাত আরও চাঙ্গা হয়ে উঠেছে, বন বিভাগ জলদাপাড়া এবং গরুমারা জাতীয় উদ্যানে হাতি সাফারির জন্য অনলাইন বুকিং পুনরায় চালু করেছে। বেশ কয়েকবার স্থগিত থাকার পর, নতুন করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সাফারি বন্ধ থাকার জেরে পর্যটকদের অনেক অসুবিধার মুখে পড়তে হয়েছিল, তবে আর নয়। গত ১৬ই সেপ্টেম্বর থেকে খুলে গিয়েছে জঙ্গল। টানা ৩ মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে জঙ্গলে প্রবেশ করতে পারছেন পর্যটকরা। শুরু হয়েছে জঙ্গল সাফারির বুকিং।
স্থানীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছরের মতো এবারও জঙ্গল খোলার আগের দিন ১৫ সেপ্টেম্বর মহাকাল পুজোর আয়োজন হয় ডুয়ার্সের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র চিলাপাতায়। মূলত জঙ্গল লাগোয়া বনবস্তিতে বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে সহ অবস্থান, জঙ্গলে গাড়ি সাফারির সময় যাতে কোনও প্রকার দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য বহুদিন থেকেই এই পুজো হয়ে আসছে চিলাপাতায়। এবারেও সেটার ব্যতিক্রম ঘটল না। জঙ্গলের মাঝে এই পুজো দেখতে দূর দুরন্ত থেকে বহু মানুষ ছুটে আসেন। এছাড়াও স্থানীয় মানুষজন, পর্যটন ব্যবসায়ী হোটেল রিসোর্ট মালিক, জিপসি চালক থেকে গাইডরা উপস্থিত ছিলেন।
শুরু জঙ্গল সাফারির বুকিং
ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি পার্থসারথি রায় এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “অনলাইন বুকিং পুনরায় চালু হওয়ায় পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়বে। যদি আপনার সাফারি টিকিট আগে থেকে হাতে থাকে, তাহলে অনেকেই মানসিকভাবে শান্তিতে তাদের ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারবেন।” বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জলদাপাড়ায় প্রতিদিন সাতটি এবং গরুমারাতে চারটি হাতি সাফারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, বর্তমানে এই সুবিধা কেবল হাতি সাফারির মধ্যেই সীমাবদ্ধ, অন্যদিকে গাড়ি সাফারি অফলাইনে বুকিং করা অব্যাহত থাকবে।
প্রধান বন সংরক্ষক (উত্তরবঙ্গ) ভাস্কর জেভি বলেন, “পুজোর আগে হাতি সাফারির জন্য অনলাইন বুকিং আবার শুরু হচ্ছে। গাড়ি সাফারি আগের মতোই অফলাইনে বুক করতে হবে।” এই ঘোষণায় হোটেল মালিক এবং ট্রাভেল এজেন্টদের মধ্যে উৎসাহ দেখা গেছে, যারা আশা করছেন যে এই সিদ্ধান্ত ডুয়ার্সের পর্যটন শিল্পকে নতুন করে গতি দেবে। হোটেল মালিকরা উল্লেখ করেছেন যে অনেক পর্যটক দীর্ঘদিন ধরে অগ্রিম বুকিং সুবিধার অভাব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীরাও সুযোগ দেখতে পাচ্ছেন। পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে হোমস্টে, রিসোর্ট, রেস্তোরাঁ এবং ভ্রমণ পরিষেবাগুলি উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা এলাকায় আরও কর্মসংস্থান তৈরি করবে।