নেশা কাহারে কয়! জমি-গয়না সর্বস্ব বেচে ৭২ লক্ষ টাকার মদ গিলেছেন বিহারের মোটুলাল

Bihar Motu Lal Story He sold his property to drink liquor

বিক্রম ব্যানার্জী, কলকাতা: নাম তাঁর মোটু লাল। বিহারের এই যুবক মদ ছাড়া এক মুহূর্তও থাকতে পারেন না! আর সেই নেশাতেই গত কয়েক বছরে নিজের জমি, গয়না এমনকি সহায় সম্বল প্রায় সব বেচে 72 লক্ষ টাকার মদ গলায় ঢেলেছেন তিনি। আজ তাঁর অবস্থা পথের ভিখারির থেকে কিছু কম নয়! তবে সর্বস্বান্ত হওয়ার পর নিজের করুণ অবস্থার জন্য দোষারোপ করছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারকে। মোটুলালের (Bihar Motu Lal) দাবি, রাজ্যকে যদি মদমুক্ত ঘোষণা না করা হত, তাহলে বোধহয় এমন দুর্দশা হতো না তাঁর।

মোটুর এমন অবস্থার জন্য দায়ী বিহার সরকার?

তাঁর নেশা মদ্যপান। সূরা প্রেম যে মোটুলালকে ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিচ্ছিল তা বুঝতে পেরেও নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি তিনি। শরীরে মদের চাহিদা মেটাতে নিজস্ব চাষের জমি, বাড়ি এমনকি সোনা গহনাও বিক্রি করে দেন বিহারের এই গুণধর। বর্তমানে সর্বস্বান্ত হয়ে বিহার সরকারের সিদ্ধান্তকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন মোটু লাল।

বলা বাহুল্য, 2016 সালে প্রথমবারের জন্য বিহারকে মদমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়ে বড় ঘোষণা দেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। তবে সরকারি সিদ্ধান্তের পরও বিহার জুড়ে মদ বিক্রি আটকানো যায়নি। নানাভাবে বেআইনি উপায়ে অতিরিক্ত দাম দিয়ে মদ কিনে নিজেদের সুরা প্রেমকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন পড়শি রাজ্যের মানুষজন। সেই তালিকায় উজ্জ্বল অক্ষরে নাম রয়েছে মোটুলালেরও।

বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে যা খবর, বিহার সরকারের তরফে মদমুক্ত বিহার ঘোষনার পরই মদের জন্য কার্যত পাগল হয়ে গিয়েছিলেন ওই যুবক। তৃষ্ণা মেটাতে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে অবৈধভাবে মদ কিনতে শুরু করেন তিনি। মোটুলাল বলছেন, বিহার সরকার যদি মদ মুক্তির ঘোষণা না দিত তাহলে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে মদ খাওয়ার প্রয়োজন পড়তো না তার। বিক্রি হতো তাঁর সাধের চাষের জমিও। তবে যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে। সুরার প্রতি অমোঘ আকর্ষণের কারণে আজ কঠিন সময় কাটাচ্ছেন মোটুলাল। এদিকে বিহারের ওই ব্যক্তির কীর্তিতে তাজ্জব পাড়া-প্রতিবেশী থেকে শুরু করে নেট নাগরিকরা।

অবশ্যই পড়ুন: হুমকি দিয়েও কেন এশিয়া কাপে খেলছে পাকিস্তান? উত্তর দিল PCB

স্থানীয় সূত্রে খবর, মোটুর যা ছিল তা যদি রাখতে পারতো, তাহলে আজ কয়েক কোটি টাকার মালিক হতো ও। তবে মদের পেছনে টাকা ঢালতে গিয়ে আজ ওর অবস্থা সবাই দেখতে পাচ্ছে। লোকজন হাসাহাসি করছে! মোটুর এক প্রতিবেশী জানান, প্রথমদিকে ছেলেটি একেবারেই এমন ছিল না। তবে কবে ওকে মদে গ্রাস করে নিল তা বোঝার আগেই সব শেষ! ওই ব্যক্তির কথায়, মোটু লালের বাড়াবাড়ির কারণে আজ তাঁর উপর যথেষ্ট ক্ষিপ্ত পরিবারের সদস্যরাও।

জানা যায়, মদের টাকা যোগাড় করতে বাড়ির সামনেই একটি খাবারের দোকানও খুলেছিলেন মোটু। তবে আজ সেই দোকান চালানো মোটু ও তার পরিবারের পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, অর্থের অভাবে রান্নার গ্যাসের কানেকশন নিতে পারেননি তারা। তাই কেরোসিন দিয়ে স্টোভ জ্বালিয়েই রান্না করতে হচ্ছে বিহারের গুনধর মোটুর মাকে। আর এই সব কিছুর জন্যই বারবার নীতিশ সরকারকে কাঠগড়ায় তুলছেন একপ্রকার সর্বস্বান্ত মোটুলাল। অতীতের কথা চিন্তা করলেই মোটু বলে ওঠেন, আগে ভালই ছিলাম। মদের উপর সরকার নিষেধাজ্ঞা বসাতেই সব শেষ হয়েছে…

 

Leave a Comment