কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ ১৫ সেপ্টেম্বর বিহারের (Bihar) সীমাঞ্চলের পূর্ণিয়ায় নতুন বিমানবন্দর উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর বলেছেন নিজের বহু পরিচিত প্রতিশ্রুতি শ্লোগান – “হাওয়াই চপ্পল ওয়ালে ভি হাওয়াই জাহাজ মে উডেগা”। আর, এই বিমানবন্দর উদ্বোধন হওয়ার ঠিক একদিন পরেই, প্রধানমন্ত্রীর এই শ্লোগান বাস্তবে সত্যি করে দেখালেন বিহারের এক যুবক! চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত ঘটনা।
হাওয়াই চটি পরে বিমানে!
সম্প্রতি ইন্সটাগ্রামে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরকে বিমানে হাওয়াই চটি পরে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে, আর ব্যাকগ্রাউণ্ডে শোনা যাচ্ছে, “পাপা সোচ রহে হ্যায়, বেটা চপ্পল পেহন কে গয়া হ্যায়, জ্যাদা দূর নাহি গয়া হোগা।” সাথে সাথে ক্যামেরাটি বিমানের জানালার দিকে ঘোরাতেই দেখা গেল, নীচে মেঘ, ওপরে আকাশে উড়ছে বিমান। ব্যাস, ব্যাকগ্রাউন্ডে এবার শুরু ফাওয়াদ ফাসিল অভিনীত আবেশাম ছবির জনপ্রিয় গান ইলুমিনাটি।
ভিডিওটি মূলত বানানো হয়েছে পূর্ণিয়া থেকে কলকাতাগামী বিমান পরিষেবার প্রতি প্রশংসা জানিয়ে, অর্থাৎ ভিডিওর মাধ্যমে এই বার্তাই দেওয়া হচ্ছে যে পূর্ণিয়া থেকে কলকাতা এখন এতটাই কাছে, যা পাশের পাড়ায় যাওয়ার মতো সহজ, যেখানে সাধারণ চটি পরেই যাওয়া সম্ভব। তবে, আদতে পুরো ভিডিওটাই ভুল! কারণ খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, ভিডিওটি আদৌ পূর্ণিয়া থেকে কলকাতাগামী কোনও ফ্লাইটের নয়, বরং এয়ারবাস A320-এর। আর পূর্ণিয়া থেকে কলকাতা রুটের জন্য আপাতত পরিষেবা দিচ্ছে ইন্ডিগো-র ATR টার্বোপ্রপ বিমান। তবে ভিডিওটি অন্য বিমানের হলেও, ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সেটি।
আরও পড়ুনঃ আশ্বিন মাসেও রেহাই নেই! দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস, আগামীকালের আবহাওয়া
চপ্পল পরেই হচ্ছে বিমান ভ্রমণ!
তবে, এই ভিডিওটি ভুল হলেও, বাস্তবে কিন্তু এই ছবি দেখা গিয়েছে কলকাতা থেকে পূর্ণিয়াগামী প্রথম ফ্লাইটে। কারণে সেই বিমানে একাধিক যাত্রীকে চপ্পল পরে উঠতে দেখা গিয়েছে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, আগে ১২ ঘণ্টার বাসযাত্রা কিংবা ট্রেনযাত্রা ছিল পূর্ণিয়া থেকে কলকাতা পৌঁছানোর একমাত্র উপায়। কিন্তু, এখন সেই যাত্রাই সম্ভব হচ্ছে মাত্র ৭০ মিনিটে। আর এই সবটাই সম্ভব হয়েছে মোদী সরকারের আঞ্চলিক সংযোগ প্রকল্প UDAN–এর দৌলতে। কারণ UDAN–এর লক্ষ্যই সাধারণ মানুষের জন্য বিমান ভ্রমণ সহজলভ্য করা। ২০১৪ সালে সারা ভারতে যেখানে অপারেট করতো ৭৪টি বিমানবন্দর, ২০২৫ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২০। পূর্ণিয়া ছাড়াও কাডাপা, ধুবড়ি, দেওঘরের মতো ছোট শহরেও এখন বিমান পরিষেবা চালু হয়েছে।
পূর্ণিয়ার এই বিমানবন্দর বিহারের জন্য অনেকটাই লাভবান হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ ভারতের শীর্ষ মাখানা উৎপাদক জেলা হিসেবে পরিচিত পূর্ণিয়া, নতুন বিমানবন্দরের মাধ্যমে এবার সেই মাখানাকে আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে দেবে। পাশাপাশি পাট ও কলার মতো অন্যান্য ফসলও বিশ্ববাজারে আরও সহজে পৌঁছে যাবে।