ISRO-র সৌজন্যে মহাকাশে প্রথমবার কৃত্রিম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ! অবাক গোটা বিশ্ব

প্রীতি পোদ্দার, নয়া দিল্লি: ২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর ভারতের সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে ISRO-র হাত ধরে PSLV রকেটে চেপে মহাকাশে পাড়ি দেয় প্রোবা-৩। মাত্র দু’বছর আয়ুর এই মিশন প্রায় ১,০০০ ঘণ্টার করোনার ডেটা পৃথিবীতে পাঠাবে বলে জানা গিয়েছে। তবে এবার এই ডেটা পাঠানোর মাঝেই ঘটে গেল এক অদ্ভুত ঘটনা। মহাকাশে কৃত্রিম সূর্যগ্রহণ (Solar Eclipse) সৃষ্টি করে তা ছবি তুলে তাক লাগাল ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি বা ESA।

কী পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ?

বৈজ্ঞানিক সূত্রে আমরা সকলেই জানি সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর এবং পৃথিবীর চারপাশে চাঁদের নিরন্তর প্রদক্ষিণের ফলে গ্রহণ হয়ে থাকে। অর্থাৎ সূর্য, চাঁদ এবং পৃথিবীর প্রদক্ষিণের সময় ঘুরতে ঘুরতে একই সরলরেখায় চলে আসে, তখন চাঁদের ছায়া পড়ে পৃথিবীর উপর।

যেহেতু চাঁদ পৃথিবীর অনেক কাছে থাকে, তার ছায়ায় সূর্যের কোনও অংশই আর দেখতে পাওয়া যায় না। তখন হয় পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। আর এটি প্রাকৃতিক সূর্যগ্রহণ। তবে এবার বিজ্ঞানের উন্নত প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কৃত্রিম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ করা হল।

কীভাবে সৃষ্টি হল এই বৈজ্ঞানিক ম্যাজিক?

প্রাপ্ত রিপোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ জুন, ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি বা ESA কৃত্রিম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের ছবি প্রকাশ করেছে। যার নেপথ্যে ছিল ESA-র ‘প্রোবা-৩’ অভিযানে ব্যবহার করা হয়েছে দু’টি স্যাটেলাইট করোনাগ্রাফ এবং অকালটার।

কৃত্রিম গ্রহণ তৈরি করতে গিয়ে অকালটারের মধ্যে থাকা চাকতি সূর্যের মাঝের অংশকে ঢেকে দিয়েছিল। আর তাতেই তার ছায়া গিয়ে পড়েছিল করোনাগ্রাফে রাখা যন্ত্রের উপর। তখনই কৃত্রিম ভাবে সূর্যের পূর্ণগ্রাস গ্রহণ চাক্ষুষ করা গিয়েছিল। সম্প্রতি সেই ছবি প্রকাশ্যে এসেছে।

কী বলছেন অ্যান্ড্রেই জ়ুকোভ?

ছবিতে দেখা যায়, করোনাগ্রাফে সূর্যের মাঝের অংশ কালো ছায়ায় ঢেকে গিয়েছে। এবং তার চারপাশ থেকে বেরোচ্ছে সবুজ আভা। সম্পূর্ণ চিত্র হুবহু স্বাভাবিক পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের মত এক থাকলেও সূর্যের আভার রং সে ক্ষেত্রে সবুজ থাকে না।

সকল বিজ্ঞানী এই চিত্র দেখে কার্যত অবাক। বেলজিয়ামের রয়্যাল অবজারভেটরির প্রধান তদন্তকারী অ্যান্ড্রেই জ়ুকোভ বলেছেন, ‘‘ছবিগুলি দেখে আমি রোমাঞ্চিত হয়েছি। এটাই ছিল আমাদের প্রথম চেষ্টা। প্রথমেই এতটা সাফল্য পাব, ভাবতে পারিনি।’’

আরও পড়ুন: কোক, Pepsi-র দিন শেষ! বড় ঝটকা দিতে চলেছে Campa! ৮০০০ কোটি ঢালছেন আম্বানি

উল্লেখ্য পৃথিবীতে মোটামুটি ১৮ মাস অন্তর সূর্যের পূর্ণগ্রাস গ্রহণ দেখা যায়। কিন্তু প্রোবা-৩ মিশনে ‘কৃত্রিম’ পূর্ণগ্রাস গ্রহণ সৃষ্টি করে রীতিমত ইতিহাস তৈরি করেছে। আর এই সবটাই হয়েছে প্রোবা-৩ মিশনে অসাধারণ সাফল্যের ফলে। বিজ্ঞানীদের মতে এই কৃত্রিম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের ছবিগুলি ভবিষ্যতে সূর্যের করোনার নিকটতম অংশের পর্যবেক্ষণ ও গবেষণায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Comment