শিলিগুড়ির নার্সিং হোমে ভয়াবহ আগুন! মৃত্যু ICU-তে থাকা রোগীর

Siliguri

প্রীতি পোদ্দার, শিলিগুড়ি: ভাইফোঁটার রাতে আচমকা আগুন শিলিগুড়ির (Siliguri) বেসরকারি হাসপাতালে । ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরে । আতঙ্কে চিকিৎসাধীন রোগীর পরিজনেরাও। ঘটনায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বড়সড় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। মূলত শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে বলে জানায় দমকল কর্মীরা। অল্পের জন্য একাধিক চিকিৎসাধীন রোগী প্রাণে বাঁচলেও মৃত্যু হল ICU তে থাকা এক কর্মীর।

ঠিক কী ঘটেছে?

রিপোর্ট অনুযায়ী, গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ভাইফোঁটার রাতে আচমকাই শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার বেসরকারি হাসপাতালের বিভিন্ন ঘর থেকে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখে সকলে। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা এবং রোগীদের পরিজনেরা রোগীদের নিয়ে হাসপাতাল চত্বর থেকে একে একে বেরিয়ে নিরাপদ দূরত্বে চলে যান। প্রবল ধোঁয়ায় ঢেকে যায় হাসপাতাল চত্বর। ছোটাছুটি পড়ে যায় নার্সিংহোমে থাকা নার্স, কর্মীরা, আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকেন রোগীর পরিজনরা। যেহেতু হাসপাতালের কাছেই রয়েছে শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার রাকেশ সিংয়ের অফিস তাই খবর পাওয়া মাত্র শিলিগুড়ি থানার পুলিশ দমকল কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন।

গাফিলতির অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে

ফায়ার অফিসার অপূর্ব কুমার দাস বলেন, হাসপাতালের ডায়ালিসিস ইউনিটে অগ্নিকাণ্ডের উৎপত্তি। এদিকে হাসপাতালে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও দীপাবলীতে ছুটির কারণে হাসপাতালে পর্যাপ্ত কর্মী ছিল না। ফলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকলেও কেউ তা পরিচালনা করতে পারেনি। অনেক কর্মী আবার নিজেরাই আতঙ্কে পালিয়ে যায়। তাই এই ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই অভিযোগ মানতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। যদিও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট ভাবে কিছু না বললেও, বিভাস ভৌমিক নামে এক আধিকারিক বলেন , “সব আছে আমাদের নার্সিংহোমে। তবে কি হয়েছে না হয়েছে তা এখনই জানা হয়নি৷” এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পরই জানা যায় যে আইসিইউ-তে থাকা এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে আগুন থেকে ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টের জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে নাকি অন্য কারণে, তা এখনও জানা যায়নি।

আরও পড়ুন: উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাসে যুক্ত হচ্ছে নতুন বিষয়, এবার বাচ্চারা শিখবে সিপিআর পদ্ধতি

ভয়ংকর অগ্নিকাণ্ডের জেরে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ পুলিশের সহযোগিতায় নীচের তলা থেকে কয়েকজন রোগীকে নিরাপত্তার স্বার্থে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায় তড়িঘড়ি। পরে দমকলের দুটি ইঞ্জিন পৌঁছে কাজ শুরু করে। এদিকে হাসপাতালের কোনো সাহায্য পায়নি অসংখ্য রোগীর পরিবার, আর তাই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এক রোগীর পরিবারের সদস্য অমিত পাল বলেন , “আমি আমার বৌ ও সন্তানকে নিজেই ওয়ার্ড থেকে নামিয়ে সুরক্ষিত জায়গায় স্থানান্তরিত করেছি। কোন হাসপাতালের কর্মীর সাহায্য পাইনি। উল্টে তারাই নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছিল।” গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ।

Leave a Comment