সহেলি মিত্র, কলকাতা: নাবালকের সম্পত্তি নিয়ে বড় রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court On Minor Property)। এখন চাইলেই কোনও অভিভাবক তাঁর নাবালক বা নাবালিকার সন্তানের স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করতে পারবে না। সম্পত্তি বিরোধ সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় দেশের শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে যদি কোনও নাবালকের সম্পত্তি তার অভিভাবক আদালতের অনুমতি ছাড়াই বিক্রি করে, তবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরে, সেই সন্তান সেই লেনদেনটি প্রত্যাখ্যান করতে পারে। আদালতে আলাদা মামলা দায়ের করার প্রয়োজন নেই। আদালত জানিয়েছে যে এই প্রত্যাখ্যান আইনত বৈধ।
নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি নিয়ে বিরাট রায় সুপ্রিম কোর্টের
রিপোর্ট অনুযায়ী, বিচারপতি পঙ্কজ মিত্তল এবং পিবি ভারালের একটি বেঞ্চ জানিয়েছে যে, হিন্দু সংখ্যালঘু ও অভিভাবকত্ব আইন, ১৯৫৬ এর ৭ এবং ৮ ধারার অধীনে আদালতের অনুমতি ছাড়া অভিভাবক কর্তৃক একজন নাবালকের স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি প্রক্রিয়া বাতিল করা হবে। আদালত আরও জানিয়েছে যে, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর, নাবালক মামলা দায়ের করে কিংবা বড় পদক্ষেপ যেমন সম্পত্তি নিজেই বিক্রি করে, এই ধরনের লেনদেন বাতিল করতে পারে। বহু বছর ধরে এরকম প্রশ্ন বারবার উঠে আসছিল যে কোনো নাবালকের সম্পত্তি তাঁর বাবা মা বিক্রি করে দিতে পারে কিনা। এই নিয়ে অনেকের মধ্যেই কৌতূহল ছিল। তবে অবশেষে সেই সকল প্রশ্নের জবাব দিল সুপ্রিম কোর্ট।
মামলার প্রেক্ষাপট কী?
আসলে কর্ণাটকের দাভানগেরে জেলার কে.এস. শিবাপ্পার আপিলের সঙ্গে এমন এক ঘটনার ঘটেছে, সেটার প্রেক্ষিতেই এই মামলার খবর সামনে উঠে এসেছে।কেএস শিবাপ্পা বনাম শ্রীমতি কে নীলাম্মার মামলায় এই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কর্ণাটকের দাভানগেরের শামানুর গ্রামে ৫৬ এবং ৫৭ নম্বর দুটি সংলগ্ন প্লটকে কেন্দ্র করে এই বিরোধের সূত্রপাত। ১৯৭১ সালে রুদ্রপ্পা নামে এক ব্যক্তি তার তিন নাবালক ছেলে – মহারুদ্রপ্পা, বাসভরাজ এবং মুঙ্গেশাপ্পার নামে জমিটি কিনেছিলেন।
জেলা আদালতের পূর্বানুমতি না নিয়েই, রুদ্রপ্পা এই প্লটগুলি তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করে দেন। ৫৬ নম্বর প্লটটি এসআই বিদারির কাছে বিক্রি করা হয় এবং পরে ১৯৮৩ সালে বিটি জয়দেবম্মা কিনে নেন। কিন্তু আগের ক্রেতারা আদালতে মামলা করে জানায়, জমি আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। এরপর নিম্ন আদালত ছেলেদের পক্ষে রায় দিলে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা হয়। হাইকোর্ট জানায়, তারা মামলা না করায় আগের বিক্রিই টিকে থাকবে। পরে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে যায়।
শীর্ষ আদালত বলেছে, নাবালকের সম্পত্তি বিক্রি করতে হলে আদালতের অনুমতি লাগবে। অনুমতি ছাড়া বিক্রি করলে সেটি বাতিলযোগ্য, অর্থাৎ বড় হলে সন্তান চাইলে সেটি বাতিল করতে পারবে। এর জন্য আলাদা করে মামলা করতে হবে না।