শুধু পুলিশই নয়, দোষী সাংসদও! মহারাষ্ট্রের ধর্ষিতা চিকিৎসকের সুইসাইড নোটে বিস্ফোরক তথ্য

Maharashtra doctor rape case

প্রীতি পোদ্দার, সাতারা: পশ্চিমবঙ্গের পর এবার মহারাষ্ট্র! এক মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুকে ঘিরে রীতিমত তীব্র চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক অন্দরে। ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মহারাষ্ট্র (Maharashtra) পুলিশের বিরুদ্ধে। আত্মঘাতী সেই মহিলা চিকিৎসক বাঁ হাতের তালুতে লিখে গিয়েছেন অভিযুক্তের নাম এবং নিজের মৃত্যুর কারণ। তবে, শুধু হাতে নয়, মৃত্যুর আগে কাগজেও কিছু লিখে গিয়েছিলেন ওই তরুণী। আর সেই চার পাতার ‘সুইসাইড নোটে’ ছত্রে ছত্রে উঠে এসেছে বিস্ফোরক সব অভিযোগ। জড়িত রয়েছে সাংসদও।

কাগজেও মৃত্যুর কারণ লিখেছেন তরুণী

তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, আত্মঘাতী মহিলা চিকিৎসক সুইসাইড নোটে যে অভিযোগ করেছে, তাতে বলা হয়েছে, ওই অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার তাঁকে একাধিক ভুয়ো ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। একজন নয়, একাধিক পুলিশ অফিসার শারীরিক পরীক্ষা না দিয়েই ফিটনেস সার্টিফিকেট নেওয়ার চেষ্টা করতেন। তিনি না মানতে চাইলে, তাঁকে দিনের পর দিন চাপ দেওয়া হচ্ছিল। একই অভিযোগ তোলে আত্মঘাতী তরুণীর পরিবার। তবে এক্ষেত্রে শুধুমাত্র পুলিশ নয়, এক সাংসদ ও তাঁর দুই পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্টও জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জড়িত মহারাষ্ট্রের সাংসদ?

সুইসাইড নোটে মৃত তরুণী দাবি জানিয়েছেন যে, নির্দিষ্ট একটি মেডিক্যাল রিপোর্ট লিখতে তিনি রাজি ছিলেন না। সেই সময় নাকি মহারাষ্ট্রের এক সাংসদের দুই ব্যক্তিগত সহকারী হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তাঁরা সাংসদকে ফোন করেন এবং সেই ফোন তরুণীকে ধরিয়ে দেন। ফোনে পরোক্ষ ভাবে সাংসদ তাঁকে হুমকি দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তরুণী। যদিও সাংসদের নাম প্রকাশ্যে আসেনি। এই নিয়ে পুলিশ সুপার ও ডেপুটি পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানিয়ে চিঠিও লেখা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি এসপি-কে ফোন করেও কোনও লাভ হয়নি বলে স্পষ্ট দাবি করেন তরুণী। তবে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশের নির্দেশে সাসপেন্ড করা হয়েছে ওই পুলিশ অফিসারকে। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে আরও নানা তথ্য উঠে আসতে চলেছে।

আরও পড়ুন: যাদবপুরে ২০ হাজার ‘ভূতুড়ে’ ভোটার! তালিকায় গরমিল নিয়ে তৃণমূল-বিজেপিকে বিঁধল সুজন

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ভাইফোঁটার দিন, ফলটনের হোটেলের ঘর থেকে তরুণী চিকিৎসকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। বাঁ হাতের তালুতে দু’জনের নাম লিখে গিয়েছেন তিনি। প্রথম নামটি এসআই-এর। লেখা হয়েছে, ‘‘ও আমার মৃত্যুর কারণ। ও আমাকে চার বার ধর্ষণ করেছে। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে ও আমাকে ধর্ষণ, মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করেছে।’’ এবং অপরজন ছিলেন, ফলটনের যে বাড়িতে তরুণী ভাড়া থাকতেন, তার মালিকের বিরুদ্ধে। হাতে লিখেছেন সেই বাড়িওয়ালার নাম। যদিও এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। আপাতত পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে প্রমাণ সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করেছে।

Leave a Comment