হাত-পা বাঁধা, গলায় ফাঁস! জুনপুটে নাবালিকার দেহ উদ্ধার নিয়ে বড় তথ্য, ধর্ষণ করে খুন?

Junput

প্রীতি পোদ্দার, জুনপুট: মেয়েদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ক্রমেই একের পর এক প্রশ্ন উঠে আসছে রাজ্য প্রশাসনের দিকে। কিছুদিন আগেই দুর্গাপুর, কুলটিতে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে এসেছিল। যার জেরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। বিরোধীপক্ষ দিন রাত রাজ্য সরকারকে ক্ষমতা নিয়ে খোঁচা দিয়েই চলেছে। এমতাবস্থায় ফের আরও এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল রাজ্যে। পূর্ব মেদিনীপুরের জুনপুটের (Junput) গোপালপুর সমুদ্র উপকূলে ঝাউবনের ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় তরুণীর দেহ। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, খুনের কথা স্বীকার করেছে অভিযুক্ত।

প্রকাশ্যে এল কিশোরীর পরিচয়

রিপোর্ট অনুযায়ী গতকাল অর্থাৎ রবিবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ স্থানীয় কয়েকজন মহিলা ঝাউবনের দিকে গিয়েছিলেন। সেই সময় ওই তরুণীর দেহ পড়ে থাকতে থাকেন। তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল। গলায় ওড়নার ফাঁস। এমন দৃশ্য দেখে ভয়ে আর্তনাদ করতে থাকেন মহিলারা। শেষে খবর দেওয়া হয় জুনপুট থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তরুণীর দেহ উদ্ধার করে। কীভাবে এই ভয়াবহ মৃত্যু হল ওই তরুণীর, তা জানতে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। প্রকাশ্যে আসে অজ্ঞাত পরিচয় কিশোরীর নাম পরিচয়। যোগাযোগ করা হয় মৃতার পরিবারের সঙ্গে। মৃতার পরিবার এই ঘটনায় কিশোরীর প্রেমিক যুবকের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলে। অপহরণ এবং ধর্ষণ করে মর্মান্তিকভাবে খুনের অভিযোগও আনা হয়েছে।

গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তকে

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েটি দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল, বয়স ১৬। কাঁথি থানা এলাকার দূরমুঠে তাঁর বাড়ি। গত পরশুদিন থেকে টিউশন পড়তে বেরিয়ে নিখোঁজ ছিল। জানা গিয়েছে স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিশোরীর। আর ওই যুবকের বাড়ি ঝাওয়া-জগন্নাথপুর পাশাপাশি গ্রাম। মৃতার পরিবারের অভিযোগ ওই যুবক কিডন্যাপ করেছিল কিশোরীকে। অভিযোগ অনুসারে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের কথাও স্বীকার করেছে ধৃত। সে জানায়, ব্যক্তিগত আক্রোশে ওই তরুণীকে খুন করে ঝাউগাছের ভিতর ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছিল। ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

আরও পড়ুন: কাকদ্বীপের পর ঘাটাল! রাতের অন্ধকারে ঘট ভেঙে কালী মূর্তি তুলে পুকুরে ফেলল অজ্ঞাতরা

উল্লেখ্য, জুনপুট হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের ধারণা এই ঘটনায় শুধুমাত্র ১ জন জড়িত নয়, আরও কয়েকজনের যোগ থাকতে পারে, তাই জোরকদমে চলছে তদন্ত। এদিকে, গোপালপুর ও জুনপুটের পর্যটন অঞ্চলে বেড়াতে আসা মানুষদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি তুলেছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, গত শুক্রবারও এলাকায় মারধর এবং অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল। তার দু’দিন পরই এমন নৃশংস খুনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা উপকূল অঞ্চলে। স্বাভাবিকভাবেই জুনপুট থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

Leave a Comment