প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: সাতসকালে কলকাতায় ফের ইডি অভিযান। পুর-দুর্নীতির অভিযানের পর এবার বেলেঘাটায় (ED Raids) নতুন অভিযানের অ্যাকশন মোডে নামল আর্থিক তছরুপ তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের একটি প্রতিনিধি দল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অভিযানের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন দুই ভাই বিশ্বজিৎ চৌধুরী ও রণজিৎ চৌধুরী। তাঁরা দু’জনই শহরের পরিচিত ব্যবসায়ী। কিন্তু কোন মামলার কারণে এই অভিযান তা এখনও স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।
ফের অ্যাকশন মোডে ED আধিকারিকরা
রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ছ’টা নাগাদ কেন্দ্রীয় বাহিনী ও ছয়জন ইডি আধিকারিকের একটি দল আচমকাই হাজির হয় বেলেঘাটা ৭৫ নম্বর হেমচন্দ্র নস্কর রোডের একটি বাড়িতে। ওই বাড়ির মালিক অর্থাৎ দুই ভাই পেশায় ব্যবসায়ী। নাম বিশ্বজিৎ চৌধুরী ও রণজিৎ চৌধুরী। বড় ভাই বিশ্বজিৎ চৌধুরী একটি কাপড়ের ব্যবসা রয়েছে। অন্যদিকে ছোট ভাই রণজিৎ চৌধুরী যুক্ত রয়েছেন রিয়েল এস্টেট ও নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে। এবার ঠিক কার বিরু্দ্ধে তদন্তে নেমে মঙ্গলবার সকালে অভিযান চালালেন ইডি আধিকারিক, তা এখনও জানা যায়নি। মুহূর্তের মধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ব্যবসায়ীর বাড়িতে পৌঁছে যায় ৬ ইডি আধিকারিক।
আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে!
প্রথম দিকে বাড়ির লোহার গেটে ক্রমাগত ধাক্কা দিলেও অপর প্রান্ত থেকে কোনো সাড়া মিলছিল না। তখনই হাজির হয় এক নিরাপত্তারক্ষী। ইডি আধিকারিকরা পরিচয় দিতেই, তিনি বাড়ির দরজা খুলে দেন। আপাতত বাড়ির অন্দরে রয়েছে আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, এই অভিযান মূলত আর্থিক অনিয়ম সংক্রান্ত তদন্তের অভিযোগে করা হচ্ছে। কিছু পুরনো আর্থিক লেনদেন, নির্মাণ ব্যবসার প্রকল্প এবং অর্থ বিনিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র যাচাই করতেই ইডি এই অভিযান শুরু করেছে। তবে ঠিক কোন মামলার সঙ্গে এই তল্লাশি যুক্ত, তা এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ‘গোটা বাংলায় খেলব, জিতবও!’ ফের স্বমহিমায় অনুব্রত মণ্ডল
বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একাধিক নথি
বেলেঘাটার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, চৌধুরী পরিবারের সামাজিক অবস্থান বেশ প্রভাবশালী। দুই ভাইয়ের ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় পরিচিত। অনেকেই বলেন, “এঁদের বিরুদ্ধে কখনও কোনো অভিযোগ শুনিনি। হঠাৎ এই অভিযান সত্যিই চমকে দিয়েছে।” ছোট ভাই রণজিৎ চৌধুরী জানান, ‘ঠিক কী কারণে তদন্ত, কোন মামলা, কিছুই জানি না। ওরা এখনও আমাদের কিছুই বলেননি। আমার ১৯৯৬ সাল থেকে রিয়েল এস্টেটের ও কনস্ট্রাকশনের ব্যবসা রয়েছে। ইতিমধ্যে পুরীতেও দু’টি হোটেল খুলেছি।’
এদিকে ইডি আধিকারিকরা সকাল থেকে ওই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট সংগ্রহ করেন। নিরাপত্তার স্বার্থে ইডি আধিকারিকরা কাউকে বাড়ির কাছে যেতে দেননি। নজর রাখছে রাজ্যের প্রশাসনিক মহল।