সহেলি মিত্র, কলকাতাঃ যে কোনও মুহূর্তে অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মান্থা’ (Cyclone Montha)। জায়গায় জায়গায় জারি করা হয়েছে সতর্কতা। এদিকে আসন্ন এই ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় বহু ট্রেন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিল রেল। ঘূর্ণিঝড় মন্থা বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে অবস্থান করছে, গোপালপুর থেকে প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে। এটি উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ সন্ধে বা রাতের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশে কাকিনাড়ায় এটি ল্যান্ডফল করতে পারে বলে খবর। এক কথায় প্রকৃতি যেন তাণ্ডব নৃত্য শুরু করেছে। এদিকে ৬০টিরও বেশি ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল বলে খবর।
ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় বহু ট্রেন বাতিল করল রেল
পূর্ব উপকূল রেলওয়ের সিপিআরও দীপক রাউত বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মান্থার কারণে বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যা কাকিনাড়ার কাছে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। যাত্রীদের অসুবিধা কমাতে বিশাখাপত্তনমের মধ্য দিয়ে যাওয়া মোট ৩২টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। আগামীকাল বিকেল ৪টা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে বলে আশা করা হচ্ছে, এরপর অনেক লোকাল এবং মেমো ট্রেন স্থগিত থাকবে। বাতিল হওয়া ট্রেনের তালিকা সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা হয়েছে।’ এছাড়া আরও ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ট্রেন বাতিলের সংখ্যা ৬৭টিতে ছাড়িয়েছে। এক নজরে দেখে নেবেন বাতিল হওয়া ট্রেনের তালিকা
১) ১৮৫১৬ বিশাখাপত্তনম-কিরান্দুল নাইট এক্সপ্রেস।
২) ১৮৫১৬ কিরান্দুল-বিশাখাপত্তনম নাইট এক্সপ্রেস।
৩) ৫৮৫০১ বিশাখাপত্তনম-কিরান্দুল প্যাসেঞ্জার।
৪) ৫৮৫০২ কিরানদুল-বিশাখাপত্তনম প্যাসেঞ্জার।
৫) ৫৮৫৩৮ বিশাখাপত্তনম-কোরাপুট প্যাসেঞ্জার।
৬) ৫৮৫৩৭ যাত্রীবাহী ট্রেন।
৭) ৬৭২৮৫/৬৭২৮৬ রাজামুন্দ্রি-বিশাখাপত্তনম-রাজহমুন্দ্রি মেমু।
৮) ১৭২৬৭/১৭২৬৮ কাকিনাড়া-বিশাখাপত্তনম-কাকিনাদা এক্সপ্রেস।
৯) ২২৮৭৫/২২৮৭৬ বিশাখাপত্তনম-গুন্টুর-বিশাখাপত্তনম ডাবল ডেকার উদয় এক্সপ্রেস
১০) ৬৭২৮৯/৬৭২৮০ বিশাখাপত্তনম-পলাসা-বিশাখাপত্তনম মেমু।
শুরু ভারী বৃষ্টিপাত
ইতিমধ্যে বহু রাজ্যের বহু জেলায় শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টিপাতের তাণ্ডব। ২৮শে অক্টোবর চেন্নাই এবং উত্তর তামিলনাড়ুর কিছু অংশে ভারী বৃষ্টিপাত হয় , এন্নোরে সর্বোচ্চ ১৩ সেমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে ভেলোরের ভিরিঞ্জিপুরম এবং চেন্নাইয়ের কাঠিভাক্কাম সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রায় ১০-১১ সেমি বৃষ্টিপাত হয়। মানালি, মাধবরাম এবং মেদাভাক্কামের মতো অনেক শহর অঞ্চলে ৭-৯ সেমি বৃষ্টিপাত হয়। উত্তর তামিলনাড়ুর তিরুভাল্লুর, চেঙ্গালপাট্টু এবং নীলগিরি জেলায়ও বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে।
অপরদিকে আইএমডি ভুবনেশ্বরের পরিচালক ডঃ মনোরমা মোহান্তি বলেন, “ঘূর্ণিঝড় মন্থা বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে অবস্থান করছে, গোপালপুর থেকে প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে। এটি উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ সন্ধ্যা বা রাতের মধ্যে কাকিনাড়ার কাছে মছলিপত্তনম এবং কলিঙ্গপত্তনমের মধ্য দিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে, যার বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিলোমিটার থেকে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। গঞ্জাম, গজপতি, রায়গড়া, কোরাপুট, মালকানগিরি, নবরঙ্গপুর এবং কালাহান্ডি জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যেখানে ভারী বৃষ্টিপাত এবং তীব্র বাতাসের সম্ভাবনা রয়েছে। জনগণকে ঘরের ভেতরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”