সহেলি মিত্র, কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য রয়েছে এক দুর্দান্ত সুখবর। ২০২৫ সাল শেষ হওয়ার আগে কেন্দ্রের মোদী সরকার অষ্টম বেতন কমিশন (8th Pay Commission) গঠনের অনুমোদন দিয়েছে। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাইকে (Justice Ranjana Prakash Desai) কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়েছে । মঙ্গলবার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এর কার্যপরিধি বা ToR -ও অনুমোদন করেছে। কমিশনের মধ্যে রঞ্জনা প্রকাশের পাশাপাশি আইআইএম বেঙ্গালুরুর অধ্যাপক পুলক ঘোষকে খণ্ডকালীন সদস্য এবং পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের সচিব পঙ্কজ জৈনকে সদস্য সচিব হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যদিও আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা হবে জাস্টিস রঞ্জনা প্রকাশ কে?
কে এই বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাই?
যাইহোক, কেন্দ্রের এহেন সিদ্ধান্তের ফলে আগামী সময়ে প্রায় ৫০ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং ৭০ লক্ষ পেনশনভোগীর বেতন ও ভাতা পর্যালোচনা করবে। বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাইয়ের জন্ম ১৯৪৯ সালের ৩০ অক্টোবর। তিনি এলফিনস্টোন কলেজ থেকে বিএ এবং মুম্বাইয়ের সরকারি আইন কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে আইন অনুশীলন শুরু করেন এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি আইনজীবী হন। পরে তিনি ১৯৯৬ সালে বোম্বে হাইকোর্টের বিচারক এবং ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিযুক্ত হন। তিনি ২০১৪ সালে অবসর গ্রহণ করেন। অবসর গ্রহণের পরও রঞ্জনা প্রকাশ দেশাই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।
২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি বিদ্যুৎ সংক্রান্ত আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারপারসন ছিলেন, যেখানে তিনি বিদ্যুৎ-সম্পর্কিত বিরোধের বিচার করেছিলেন। এরপর, ২০১৮-১৯ সালে, তিনি আয়কর অগ্রিম রুলিং কর্তৃপক্ষের প্রধান হন। ২০১৯ সালে, তিনি লোকপালের জন্য অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারপারসন ছিলেন এবং চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। ২০২০ সালে, তিনি সীমানা নির্ধারণ কমিশনের চেয়ারপারসন হন, যা কিনা লোকসভা এবং বিধানসভা আসন বন্টন করে।
তিনি আসামের এনআরসি প্রস্তুতকারী কমিটিরও সদস্য ছিলেন। ২০২২ সালে, তিনি প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার (পিসিআই) প্রথম মহিলা চেয়ারপারসন হন, যেখানে তিনি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সঠিক প্রতিবেদনের তত্ত্বাবধান করেন। একই বছর, তিনি উত্তরাখণ্ড ইউসিসি কমিটির প্রধান হন, যা অভিন্ন দেওয়ানি বিধির খসড়া তৈরি করেছিল, যা ২০২৪ সালে আইনে পরিণত হয়। এমনকি তিনি বর্তমানে গুজরাট ইউসিসি কমিটির চেয়ারপারসন। ২০২২ সাল থেকে কার্যকর এই কমিটি বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ এবং উত্তরাধিকারের মতো বিষয়গুলিতে অভিন্ন আইনের উপর একটি রিপোর্ট তৈরি করছে। তিন বছর ধরে ধর্মীয় নেতা, মহিলা সংগঠন এবং আইন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে মতামত চাওয়া হয়েছে। শীঘ্রই এই প্রতিবেদনটি সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে। প্রাক্তন বিচারপতি দেশাইয়ের কাজ সর্বদা জাতীয় স্বার্থ এবং সমতার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।
অষ্টম বেতন কমিশন থেকে প্রত্যাশা কী?
সরকারি কর্মচারীরা এখন আশাবাদী যে অষ্টম বেতন কমিশন তাদের বেতন, পেনশন এবং ভাতা বৃদ্ধির সুপারিশ করবে। ২০১৬ সালে কার্যকর হওয়া পূর্ববর্তী সপ্তম বেতন কমিশন মূল বেতন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছিল। কর্মচারী সংগঠনগুলি বিশ্বাস করে যে কমিশন যদি ২০২৬ সালের মধ্যে তার রিপোর্ট জমা দেয়, তাহলে ২০২৭ সাল থেকে অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।